কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা

Oxat 20 এর কাজ কি বিস্তারিত জেনে নিনআপনারা কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা এবং ফ্রোজেন কোলাজেন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকে আমরা কোলাজেন ট্যাবলেট গ্রহণের ফলে আমাদের শরীর ও ত্বকের যেসব উপকার হয় তা সম্পর্কে বিস্তারিত কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা আর্টিকেলটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কোলাজেন ট্যাবলেট সেবনের পূর্বে অবশ্যই প্রত্যেককে কোলাজেন ট্যাবলেট এর কাজ, ফ্রোজেন কোলাজেন খাওয়ার নিয়ম এবং এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা জরুরী। কোলাজেন ট্যাবলেট সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পড়ে ফেলুন আজকের কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা আর্টিকেলটি।

কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট

কোলাজেন হচ্ছে এক ধরনের স্ট্রাকচারাল প্রোটিন। একজন মানুষের শরীরে বেশি পরিমাণে পাওয়া প্রোটিনই হচ্ছে কোলাজেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় পাওয়া গেছে, মানুষের শরীরের মোট ৪ ভাগের ৩ ভাগই হচ্ছে কোলাজেন। মানুষের শরীরের পেশি, দাঁত, হাড়, ত্বক, চোখ, নখ, রক্তনালী, টিস্যু, অস্থি সব জায়গায় উপস্থিতি পাওয়া যায়। বলা যায় এসব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
একজন মানুষের শরীরে প্রায় ২৮ রকমের কোলাজেন পাওয়া যায়। তবে সবারই কাজের ধরন এবং গঠন অনুযায়ী ভিন্নতা রয়েছে। সবাই মানুষের শরীরে কার্যকারিতার দিক থেকে বিভিন্ন অংশে সরাসরি প্রভাব ফেলে। মানুষের শরীরের যেসব অংশে সরাসরি প্রভাব ফেলে তা হল;
  • হাড়ের জয়েন্টে।
  • দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়।
  • ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে।
  • কিডনি সুরক্ষায়।
  • হৃদযন্ত্রের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখা।
  • এবং দেহের অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গের সুরক্ষা রাখা।

ফ্রোজেন কোলাজেন খাওয়ার নিয়ম

অনেকে জানতে চায় ফ্রোজেন কোলাজেন খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। এ বিষয়ে বলতে গেলে প্রথমে বলতে হয় আপনারা শুধু ফ্রোজেন কোলাজেন নয় যেকোন ওষুধই সেবন করতে যাবেন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। কেননা ওষুধের ডোজ সাধারণত একজন মানুষের শরীরের কন্ডিশন এবং বয়সের উপর নির্ভর করে।

তারপরও আপনাদের সুবিধার্থে বলছি, প্রতিদিন সকালে খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে ১ টি খাবেন এবং রাতে খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে ১ টি খাবেন। এভাবে এক মাস খেতে পারবেন।

কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা

কোলাজেন ট্যাবলেট আমাদের শরীরের জন্য বিভিন্ন রকমের উপকার রয়েছে। যা আমরা অনেকেই জানিনা। কোলাজেন ট্যাবলেট সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন করবেন । কারণ সবার শরীরের জন্য প্রয়োজন নাও পড়তে পারে। অনেকে রয়েছে নিজে নিজেই শরীরের উপকার হবে এমন ভেবে বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে থাকেন। আসলে কিন্তু তা মোটেও উচিত হবে না। তাহলে চলুন, কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
  • ত্বককে ফর্সা করতে সহায়তা করে।
  • মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করে।
  • বয়সের ছাপ কমিয়ে দেয়।
  • ফুসফুসের সংক্রমণ এড়াতে সহায়তা করে।
  • খাদ্য বিপাক ও হজম প্রক্রিয়া দ্রুত করে।
  • পেশি শক্তিশালী করে।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ফ্রোজেন কোলাজেন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

প্রতিটা ওষুধেরই কোন না কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তারপরও ব্যাধির প্রয়োজনে সেবন করতে হয়। তেমনি ফ্রোজেন কোলাজেন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। ফ্রোজেন কোলাজেন সেবনের ফলে শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা হল;
  • বমি বমি ভাব হতে পারে।
  • পেট ব্যথা করতে পারে।
  • চামড়াতে হালকা ফুসকুড়ি বের হতে পারে।
  • ঘুম কম হতে পারে।
  • ত্বকে ক্ষত হতে পারে।

কোলাজেন ক্রিম এর উপকারিতা

কোলাজেন ক্রিম ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। এবং তরুণ - তরুণীদের সুদর্শন বর্ণ তৈরিতে সহায়তা করে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে কোলাজেন নাইট ক্রিম ভালো মানের প্রোডাক্ট দেখে ক্রয় করতে হবে। এবং উপাদান হিসেবে থাকতে হবে রেটিনল, পেপটাইডস, ইমোলিয়েন্টস, এবং ভিটামিন ডি এর মত রয়েছে। 
আপনার ত্বকের যত্নে কোলাজিন ক্রিম ব্যবহারের ফলে আপনার বার্ধক্য কমিয়ে আনুন এবং আপনার ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখুন। কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা আর্টিকেলের মাধ্যমে জানুন কোলাজেন ক্রিম এর উপকারিতা সম্পর্কে।
  • ত্বক ফর্সা করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
  • ব্রণ দূর করে।
  • মুখের বলি রেখা দূর করে।
  • চোখের নিচে কালো দাগ দূর করে।
  • স্কিনের তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
  • স্কিন নরম রাখতে সহায়তা করে।

স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়ার ঔষধ

স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়ার কোন ওষুধ নেই। তবে সাময়িকভাবে ফর্সা হওয়ার জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, ক্রিম পাওয়া যায়। যা ব্যবহার বা সেবনের ফলে আপনার ত্বকের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য আপনারা চেষ্টা করবেন ভিটামিন 'সি' যুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণ করা। আপনার ত্বক ফর্সা করার চেয়ে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখায় আসল কাজ। তারপরও আপনারা নিচের ওষুধ গুলো সেবন করতে পারেন। কিছু ত্বক ফর্সাকারী ওষুধের নাম দেয়া হল;
  • সাফি ক্যাপসুল
  • ভিটামিন ই ক্যাপসুল
  • L-Gluta5 Berry Plus
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনারা এসব ওষুধ ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই স্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে সেবন করার চেষ্টা করবেন। কেননা আপনার শরীরের কমিশন এবং বয়স ভেদের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসকেরা ওষুধ সেবন করার পরামর্শ দেন এবং ডোজ দিয়ে থাকেন।

কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার

কোলাজিন সাপ্লিমেন্ট ছাড়াও আমরা কিন্তু প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীরে কোলাজেন উৎপাদন করতে পারি। যা শুধুমাত্র আমাদের প্রতিদিনের খাবার মেন্যুতে কোলাজেনযুক্ত কিছু খাবার রাখার মাধ্যমে। উন্নত বিশ্বের মানুষদের দিকে লক্ষ্য করলে দেখি তারা দীর্ঘদিন যাবত বেঁচে থাকে এবং তাদের ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখে। আমাদের বাংলাদেশের মানুষদের তুলনায় বয়স হলেও তাদেরকে অনেক তরুণ দেখায়।

প্রশ্ন আসতেই পারে তাহলে কিভাবে? কারণ তারা কোলাজেনযুক্ত ডায়েট খাবার বেশি খেয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই প্রত্যেকের জানা উচিত কোলাজেন খাবার সম্পর্কে। এখন চলুন জেনে নেই, কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা আর্টিকেলের এই পর্বে কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার গুলো কি কি।
  • মুরগির মাংস
  • মাছ ও সামুদ্রিক মাছ
  • ভিটামিন সি যুক্ত ফল
  • কাজুবাদাম
  • ডিম
  • রসুন
  • বেরি
মুরগির মাংসঃ কোলাজেন উৎপাদনে সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে মুরগি। মুরগির শরীরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে যোজক টিস্যু আর এই যোজক টিস্যুই কোলাজনের উৎস। এছাড়াও মুরগির মাংস মানুষের শরীরে আমিষের চাহিদা পূরণ করে।

মাছ ও সামুদ্রিক মাছঃ মাছ ও সামুদ্রিক মাছের চামড়া, কাটা, মাথা, চোখে এবং লিগামেন্টে রয়েছে কোলাজেন। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ খাওয়া বেশ উপকারী। সামুদ্রিক মাছ থেকে পাওয়া কোলাজেন দ্রুত শরীরে শোষণ হয়।

ভিটামিন সি যুক্ত ফলঃ আমরা সবাই জানি, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে ভিটামিন সি এর গুরুত্ব অপরিসীম। আর এই ভিটামিন সি এর সাথে কোলাজেনের গভীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাই নিয়মিত ভিটামিন সি যুক্ত ফলমূল খেলে কোলাজেনের ভারসাম্য বজায় থাকে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

কাজুবাদামঃ কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিংক ও কপার। এ দুটোই কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত কাজুবাদাম খেলে শরীর ও ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।

ডিমঃ ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে প্রোলিন রয়েছে। আর এই প্রোলিন হচ্ছে এক প্রকার অ্যামাইনো এসিড। অ্যামাইনো এসিড মানুষের শরীরে পোলাজেন উৎপাদনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রসুনঃ রসুন রয়েছে সালফার। যা মানুষের দেহে প্রাকৃতিকভাবে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে।

বেরিঃ স্ট্রবেরি, ব্লুবের এবং রাম্পবেরিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও ভিটামিন সি রয়েছে। যা কোলাজেন উৎপাদন এনজাইমগুলোর জন্য কোফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। তাই নিয়মিত বেরি ফল খাবেন।

শেষ কথা - কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা

প্রিয় পাঠক, আশা করছি, কোলাজেন ট্যাবলেট এর উপকারিতা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহ পড়ার মাধ্যমে কোলাজেন ট্যাবলেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং বার্ধক্য এড়াতে কোলাজেন ট্যাবলেট খুবই উপকারী। কিন্তু আপনারা চেষ্টা করবেন কোলাজেন উৎপাদনকারী যেসব প্রাকৃতিক খাবার আছে সেগুলো নিয়মিত গ্রহণ করার। তাহলে আপনার ত্বকের লাবণ্যতা বজায় থাকবে।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url