ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি

ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আজকে আমরা ইমকন কি, ইমার্জেন্সি পিল খাওয়া কি ক্ষতিকর? ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করবো। ইমারজেন্সি পিল ইমকন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি আর্টিকেলটি পড়ুন।
ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি
ইনকন ট্যাবলেট ইমারজেন্সি সলভ করতে বেশি উপকারী। যখন কেউ ভুলবশত প্রটেকশন ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক করে তখন গর্ভধারণ থেকে রক্ষা পেতে ইনকন ট্যাবলেট ব্যবহার করেন। তাই ইমকন ট্যাবলেট সম্পর্কে বিস্তারিত ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

ইমকন কি

ইমকন হচ্ছে হচ্ছে এক ধরনের ইমারজেন্সি পিল। ইমকন সাধারণত মহিলাদের গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট। যখন কেউ অনিরাপদ ভাবে সহবাস করে বা শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় তখন ইমকন একটি নির্দিষ্ট সময় এর মধ্যে খেলে আর কোন সমস্যা হয় না। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে সবসময় গর্ভনিরোধক এর জন্য ব্যবহার করতে পারবেন তা কিন্তু না শুধু ইমারজেন্সি অবস্থায় ব্যবহার করতে পারবেন। ইমকন ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ইমকন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে হবে যে কত সময়ের মধ্যে খাওয়া উচিত, এর সঠিক কাজ কি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে।
  • ইমকন ১ - ১.৫ মিলিগ্রাম এবং ০.৭৫ মিলিগ্রাম হয়। 
  • জেনেরিক নাম - লিভোনোরজেস্টেল
  • কোম্পানি - রেনেটা
  • দাম - ৭০ টাকা

ইমকন কত ঘন্টার মধ্যে খেতে হয়

যদি কারো ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তাহলে অবশ্যই সঠিক নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। তাছাড়া আপনি যে উদ্দেশ্যে ইমকন খাবেন তার কার্যকারিতা পাবেন না। আপনারা হয়তো জানেন, ইমকন ট্যাবলেট সাধারণত ইমারজেন্সি জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন হল ইমকন কত ঘন্টার মধ্যে খেতে হয়? বলা হয়ে থাকে যে, আপনার সঙ্গীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার ১২ ঘন্টা থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইমকন ট্যাবলেট সেবন করতে হয়। যদি ৭২ ঘণ্টা পর সেবন করেন তাহলে এই ওষুধ কোন কাজ করবে না।

ইমার্জেন্সি পিল খাওয়া কি ক্ষতিকর

হ্যাঁ, ইমারজেন্সি পিল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ইমারজেন্সি খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইমারজেন্সি পিল এক ধরনের হরমোনাল ওষুধ। ইমারজেন্সি পিল সেবনের ফলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নিঃসরণ অর্থাৎ ওভুলেশন প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেয় অথবা নিষিদ্ধ ডিম্বানুকে জড়ায়ুতে প্রতিস্থাপন করতে বাধার সৃষ্টি করে। যেসব মহিলাদের ওভুলেশন হয়ে গেছে অথবা নিষিদ্ধ ডিম্বাণু জড়ায়ুতে প্রতিস্থাপন হয়ে গেছে সেসব মহিলারা ইমার্জেন্সি পিল খেলে তেমন কোন কাজে আসবে না।
ইমারজেন্সি পিল খেলে শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে তা হল; পিল খাওয়ার পর মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে বমি হওয়া, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, মাসিক আগে বা দেরিতে হতে পারে এবং মাসিক অনিয়মিত হতে পারে এবং পরবর্তীতে ঘন ঘন ইমারজেন্সি পিল খেলে গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে। মনে রাখবেন, শুধু ইমারজেন্সি পিল ব্যবহৃত হয় অপরিকল্পিতভাবে শারীরিক সম্পর্ক করার ফলে। যেন তাড়াতাড়ি গর্ভধারণ প্রতিহত করতে পারে।

ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি

ইমকন ট্যাবলেট সচরাচর বিভিন্ন ফার্মেসিতে পাওয়া যায়। যা ইমারজেন্সি পিল হিসেবে পরিচিত। ইমকন ট্যাবলেট ব্যবহৃত হয় সাধারণত অনাকাঙ্ক্ষিত ও অসুরক্ষিত সহবাসের পরবর্তী সময়। ইমারজেন্সি সময়ে ইমকন ট্যাবলেট ব্যবহারের মাধ্যমে একজন মহিলা সহজেই অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের বিষয় থেকে কাটিয়ে উঠতে পারে। তবে এটা মাথায় রাখতে হবে যে নিয়মিত ব্যবহারের জন্য ইমারজেন্সি পিল সেবন করা হয় না। শুধু ইমারজেন্সি পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যায়।
এ ধরনের ইমারজেন্সি পিল ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই পিল সম্পর্কে সঠিক ব্যবহার বিধি এবং কাজ ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিবেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করবেন। ভুল প্রক্রিয়ায় সেবন করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা থাকতে পারে। এজন্য আপনাদের কথা চিন্তা করে আমাদের ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি এই আর্টিকেলটি। এখন চলুন, ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়মঃ
  • অনাকাঙ্ক্ষিত বা অরক্ষিত সহবাসের পর যথা সম্ভব ইমকন ট্যাবলেট সেবন করা।
  • গর্ভরোধ করতে ইমকন একটি ট্যাবলেট সেবন করলেই হবে। এর বেশি সেবন করার প্রয়োজন পড়ে না।
  • সহবাস করার পর ১২ ঘন্টা থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খেতে হবে। অন্যথায়, কাজ করবে না।
  • ইমকন ব্যবহারের পর সাধারণত ৭ - ১০ দিনের মধ্যে মাসিক হয়। কোন ক্ষেত্রে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়।
  • মাসিক অবস্থায় যেকোনো সময় এই ওষুধ সেবন করতে পারবেন।
  • জন্ম প্রতিরোধ ট্যাবলেট খাওয়ার পরবর্তী মাসিক পর্যন্ত অবশ্যই যে কোন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। যেমনঃ কনডম
  • শরীরে যদি অন্য কোন ব্যাধির উপসর্গ থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করবেন।
উপরোক্ত নিয়ম বা পদ্ধতি অনুসরণ করে ইমকন ট্যাবলেট ব্যবহার করুন। সবচেয়ে ভালো হয় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা। তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে এর কার্যকারিতা লক্ষ্য করতে পারবেন। এসব ইমারজেন্সি পিল সেবনের ক্ষেত্রে নিয়ম - কানুনের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া উচিত। কারণ একটু ভুল হলে শারীরিক অনেক ক্ষতি হতে পারে।

ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কিঃ

ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি হচ্ছে অরক্ষিত সহবাসের পর অতি দ্রুত এই ট্যাবলেট খেলে গর্ভধারণ হওয়া থেকে সুরক্ষিত রাখে। যদি আপনি শারীরিক সম্পর্ক করার পর ৭২ ঘন্টা পার হয়ে যায় তারপর যদি ইমারজেন্সি পিল সেবন করেন তাহলে এই ওষুধ কাজ করে না এমনটাই বলা হয়ে থাকে। এজন্য যত সম্ভব তাড়াতাড়ি সেবন করাটাই আপনার জন্য কার্যকরী। আপনি যেসব ক্ষেত্রে ইমকন ট্যাবলেট সেবন করতে পারবেন তা হল;
  • একজন মহিলা যদি অন্য কোন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অনুসরণ না করে থাকেন।
  • যদি পরপর তিনদিন জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেতে ভুলে যায়।
  • শারীরিক সম্পর্ক করার সময় যদি প্রটেকশন ব্যবহার না করেন বা প্রটেকশন অকার্যকর হয়ে যায়।
  • যদি মনে করেন জরায়ুতে অবস্থিত জন্মনিরোধক স্থানচ্যুত হয়েছে।
  • এবং যখন ওনাকাঙ্খিত কেউ ধর্ষণ হয়েছেন।

ইমকন খাওয়ার পর মাসিক হচ্ছে না

ইমকন যেহুত ইমারজেন্সি পিল নাম হিসেবে চিহ্নিত সেহুত ইমারজেন্সি কাজের জন্যই ব্যবহৃত হয় তাই না। ইমকন খাওয়ার ফলে মহিলাদের শরীরে কিছু হরমোনের পরিবর্তন ঘটে থাকে। এই হরমোনের পরিবর্তন এর ফলে দেখা যায় মহিলাদের মাসিক অনিয়মিত হচ্ছে। কখনো নির্দিষ্ট সময়ের আগে আবার কখনো পরে মাসিক হয়। ইমকন ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার ফলে হরমোনের আধিক্যর কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাসিক দেরিতে হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি থাকে।সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যেই আপনার মাসিক হয়ে যাওয়ার কথা।

আবার অনেকের আছে যে আগেই অননিয়মিত মাসিক হতো সে ক্ষেত্রে ইমকন খাওয়ার পর মাসিকের সমস্যা হতে পারে। আর যদি আপনার মাসিক দুই সপ্তাহের বেশি সময় অতিক্রম করে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কেননা ইমারজেন্সি পিল সেবনে অনেক ক্ষেত্রে কিছু মহিলাদের কাজ নাও করতে পারে এবং আপনি পেগনেন্ট ও হতে পারেন। এজন্য নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রথমে আপনি নিজেই প্রেগনেন্সি কিট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন।

ইমকন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার পর আপনার শরীরে কিছু সময়ের জন্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এতে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। এ সময় আপনি চেষ্টা করবেন নিজেকে চিন্তা মুক্ত রেখে বিশ্রাম নেওয়ার। তাহলে দুই - একদিনের মধ্যে আপনার শরীর সুস্থতা অনুভব করবেন। ইমকন ট্যাবলেট সেবনের পর যে সব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তা হলো;
  • মাথা ব্যথা হওয়া
  • জ্বর জ্বর ভাব অনুভব করা।
  • বমি বমি ভাব হওয়া।
  • তলপেট ব্যথা করবে।
  • স্তনে ব্যথার অনুভূতি।
  • ঝিমুনি ও বিষন্নতা হওয়া।
  • শরীর ক্লান্তি বোধ করা।
  • যোনিপথে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
  • মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
লক্ষ্য রাখবেন উপরের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ব্যতীত যদি অন্য কোন শারীরিক অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিবেন। এছাড়াও যদি ওষুধ সেবন করার পর কয়েক ঘন্টার মধ্যে যদি বমি হয় তাহলে পুনরায় আরেকটি ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন।

ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি - শেষ কথা

পাঠক, আজকে আমরা মেয়েদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। চেষ্টা করেছি, ইমকন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম - ইমকন ট্যাবলেট এর কাজ কি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ইমারজেন্সি পিল এর সঠিক ব্যবহার বিধি, কাজ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার। মনে রাখবেন এসব ইমারজেন্সি পিল সেবনের আগে অবশ্যই ওষুধ সম্পর্কে জেনে নিবেন। প্রয়োজনে একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শে ইমারজেন্সি পিল সেবন করার চেষ্টা করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url