অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় কি

আপনি কি অতিরিক্ত গরমে ভুগছেন? আপনি কি শরীর গরম থাকার কারণে চিন্তিত? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। প্রচন্ড গরম হওয়ার কারণে অনেকে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। এজন্য আমরা গরম থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে তুলে ধরব।
অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় কি
এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে আমরা শরীর গরম কিসের লক্ষণ এবং অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন আজকের আলোচনা শুরু করা যাক,

শরীর গরম থাকা কিসের লক্ষণ

আমাদের মধ্যে অনেকেরই শরীর গরম থাকে। অনেকের কাছে এই সমস্যা অনেক ভয়াবহ মনে হয় ফলে তাদের মনে প্রশ্ন জাগে শরীর গরম থাকা কিসের লক্ষণ বা এর ফলে কি রোগ হতে পারে। আপনি যদি শরীর গরম থাকা নিয়ে চিন্তিত থাকেন এবং এটা কিসের লক্ষণ তা জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক উপকারী হবে। 

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা শরীর গরম থাকা কিসের লক্ষণ তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আশা করি শরীর গরম থাকার ফলে কি হতে পারে তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক শরীর গরম হওয়া কিসের লক্ষণ?

সাধারণত ২ টি কারণে আমাদের শরীর গরম হয়ে থাকে। প্রথমটি হল জ্বর এবং দ্বিতীয়টি হল হাই প্রেসার। বেশিরভাগ সময়ে জ্বরের কারণে আমাদের শরীর গরম হয়। তাই যখন আমাদের শরীর গরম হবে তখন আমাদের উচিত থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে নেওয়া। শরীরের তাপমাত্রা মাপার পর আপনি বুঝতে পারবেন আপনার জ্বর বেশি নাকি কম। 

যখন শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে গরম হয়ে থাকে তখন অতিরিক্ত জ্বরের পাশাপাশি শরীর কাঁপুনি,মাথাব্যথা এবং চোখে ব্যথা অনুভব হয়। তাই যখন আমাদের শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যাবে তখন আমাদের উচিত ভাল ডাক্তারের কাছে গিয়ে জ্বর মাপা এবং ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া।

শরীর গরম হওয়ার দ্বিতীয় কারণটি হলো হাই প্রেসার। সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের হাই প্রেসার হয়ে থাকে। শুধুমাত্র হাই প্রেসার নয় এমনকি লো প্রেসারের কারণেও শরীর গরম হয়ে যায়। এজন্য যে সকল ব্যক্তিদের হাই প্রেসার অথবা লো প্রেসার জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের উচিত সবসময় প্রেসারের ওষুধ সঙ্গে রাখা। 

এছাড়াও যখন কোন ব্যক্তি হাইপ্রেসার বা লো প্রেসারের আক্রান্ত হয় তখন তার কাছে উপস্থিত থাকা ব্যক্তিদের উচিত তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ হাওয়া বাতাসের ব্যবস্থা করে দেওয়া।এই আর্টিকেলটি পাড়ার মাধ্যমে আশা করি শরীর গরম থাকার লক্ষণ সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

মেয়েদের শরীর গরম থাকে কেন

আমাদের সকলের জানা আছে যে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের শরীর বেশি গরম হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই জানে না কি কারনে মেয়েদের শরীর বেশি গরম হয়ে থাকে। আবার অনেকে মনে করে শরীর গরম হওয়া মানেই জ্বর আসা। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল কারণ মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বিভিন্ন কারণে পরিবর্তন হতে পারে।

এই আর্টিকেলে আমরা মেয়েদের শরীর গরম থাকে কেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।সাধারণত অবিবাহিত নারীদের শরীর সবসময় গরম হয়ে থাকে। তাদের শরীর গরম হওয়ার পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো হরমোনাল প্রভাব। হরমোনের প্রভাব জনিত কারণে মেয়েদের শরীর গরম হয়ে থাকে।

এছাড়াও যৌন সংক্রমন অথবা যৌন চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে মেয়েদের শরীরে তাপমাত্রা বেশি হয়ে থাকে তাহলে তাদের শরীর বেশিরভাগ সময় গরম হয়ে থাকে। এছাড়াও বেশ কিছু কারণ রয়েছে তা নিচে উল্লেখ করা হলো;
  • স্বাভাবিকভাবেই মেয়েরা সবসময় ঘরের মধ্যে অবস্থান করে এবং বেশি কাপড় পরিধান করে থাকে। যার কারণে স্বাভাবিক আবহাওয়া থেকে মেয়েরা বঞ্চিত হয়ে থাকে ফলে তাদের শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে থাকে।
  • মেয়েদের শরীরের চামড়া পাতলা হয়ে থাকে এবং প্রতিনিয়ত রক্ত প্রবাহ চলতে থাকে। এই কারণেও মেয়েদের শরীর গরম হয়ে থাকে।
  • অনেক মেয়ে রয়েছে যারা গ্রাম থেকে শহরে যায় আবার শহর থেকে গ্রামে যায়।ফলে পরিবেশগত সমস্যার কারণে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
  • সকল মেয়েরাই প্রাকৃতিকভাবে অসুস্থ হয়ে থাকে। এই অসুস্থতার কারণে তাদের দেহে ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। ফলে তাদের শরীর স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গরম থাকে।
  • একটা বাড়ির সকল কাজকর্ম মেয়েরাই করে থাকে। অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে অনেক মেয়ের শরীর গরম হয়ে থাকে।

কি খেলে শরীর ঠান্ডা হবে

গ্রীষ্মকালীন এই প্রচন্ড গরমে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। প্রচন্ড গরমের কারণে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কেননা অতিরিক্ত গরমে মানুষের খাওয়ার রুচি কমে যায়। যখন অতিরিক্ত গরম হয় তখন আমাদের শরীরে এমনিতেই প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপন্ন হয় ফলে আমাদের শরীরের খাবারের বিপাক জনিত তাপের প্রয়োজন হয় না। 

যার কারণে আমাদের মধ্যে খাবার না খাওয়ার ইচ্ছাটা বেড়ে যায়।কিন্তু এই প্রচন্ড গরমে এমনিতেই শরীর দুর্বল থাকে আবার যদি খাবার না খাওয়া হয় তাহলে আমাদের শরীরে হেঁটে চলার মত শক্তি ও থাকবে না। আবার অনেক মানুষ রয়েছে যারা এই অতিরিক্ত গরমে প্রচুর পরিমাণে আইসক্রিম অথবা ঠান্ডা জনিত খাবার খেয়ে থাকে। 

কিন্তু প্রচণ্ড গরমে অতিরিক্ত ঠান্ডা জনিত খাবার খাওয়া উচিত নয়। তাহলে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য আমাদের কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত? চলুন দেখে নেওয়া যাক প্রচন্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য আমাদের কোন খাবারগুলো খেতে হবে।
  • পানি
  • ফলমূল
  • শাকসবজি
  • প্রোটিন
পানিঃ পানির অপর নাম জীবন। তাই গরম হোক কিংবা ঠান্ডা যে কোন সময় আমাদের পানি খাওয়া প্রয়োজন। বর্তমান সময়ের এই প্রচন্ড গরমে তাপমাত্রা ৩৮-৪১ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর মধ্যে ওঠানামা করতেছে। এই অতিরিক্ত গরমের কারণে আমাদের শরীর প্রচন্ড পরিমাণে ঘেমে যায় এবং দেহ থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। 

তাই আমাদের সকলের উচিত দৈনিক দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা। এছাড়াও শরীর ঠান্ডা রাখা এবং পানির অভাব পূরণ করার জন্য আপনি ফলের রস, জুস কিংবা ডাবের পানি পান করতে পারেন। তবে এর পরিমাণ দৈনিক ২০০ মিলিলিটারের মধ্য রাখা উত্তম। আবার অধিক পরিমাণে পানি পান করাও ঠিক নয়। তবে যখন তৃষ্ণা পাবে তখন সাথে সাথে পানি পান করা উচিত।

ফলমূলঃ আমরা সকলেই জানি যে, প্রচন্ড গরমে শরীর দুর্বল থাকে। তাই আমাদের এমন কিছু ফলমূল খেতে হবে যাতে আমাদের দেহের চাহিদাগুলো পূরণ হয় এবং পাশাপাশি শরীর ঠান্ডা থাকে। এজন্য খাবার হিসাবে এমন কিছু ফলমূল বেছে নিতে হবে যাতে জলীয় অংশ বেশি থাকে। সেই সকল ফলমূলের মধ্যে অন্যতম হলো তরমুজ এবং বাঙ্গি। 

তরমুজ এবং বাঙ্গির প্রায় ৭০-৭৫ ভাগ পানি থাকে। পাশাপাশি এটি আমাদের ভিটামিন জনিত চাহিদা পূরণ করবে। এই গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য ফলমূল হিসেবে আপনি শসা খেতে পারেন কারণ শসা একই সাথে আমাদের দেহের পানি শূন্যতা পূরণ করে এবং শরীরকে খুব দ্রুত ঠান্ডা করে। আবার শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য আপনি লেবু খেতে পারেন। 

লেবু শরবত করে ভাতের সাথে অথবা সালাদের মাধ্যমে আপনি খেতে পারেন। লেবুর মধ্য ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী। গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফল হলো আম। পাকা আমে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা আমাদের শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে ।

শাকসবজিঃ আমরা সকলেই জানি শাকসবজি আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী। তাই শরীরকে সবল রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত শাকসবজি খাওয়া উচিত। তবে গরমের মধ্যে এমন কিছু শাকসবজি খেতে হবে যা আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখে। যেমনঃ পুদিনা পাতা, তোকমা দানা, পুইশাক,লাউ, ঢেঁড়স ইত্যাদি।
 
পুদিনাপাতা আমাদের দেহের ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। আমরা বিভিন্নভাবে পুদিনা পাতা খেতে পারি। পুদিনার শরবত,পুদিনা পাতা গুরা অথবা সালাতের সঙ্গে আমরা পুদিনা পাতা খেতে পারি। আমাদের মধ্যেও অনেকেই চা পছন্দ করেন। যারা চা পছন্দ করেন তারা পুদিনা পাতার চা খেতে পারেন।

আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে লাউ অনেক সহজলভ্য। লাউ আমাদের দেহের ওজন কমাতে এবং হজম করতে সহায়তা করে পাশাপাশি আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। তাই শরীর ঠান্ডা রাখতে আপনি নিয়মিত লাউ তরকারি খেতে পারেন এবং পাশাপাশি লাউ সেদ্ধ করে দোয়ের সঙ্গে মিশিয়ে অথবা লাউয়ের সুপ খেতে পারেন।

গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির মধ্য অন্যতম হলো ঢেঁড়স।এটি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আপনি ঢেঁড়স ভর্তা, ভাজি অথবা তরকারি করে খেতে পারেন। আমাদের সকলের উচিত নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ঢেঁড়স রাখা।

প্রোটিনঃ আমাদের দেহের জন্য প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজন। যে সকল প্রোটিন জাতীয় খাবার রয়েছে তাদের মধ্য দই, দইয়ের তৈরি লাচ্ছি, অথবা মাঠা আমাদের শরীর ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি আমিষ ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে থাকে। এছাড়াও দই দেহের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়ায় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই এই গরমে প্রোটিন হিসেবে আমাদের সকলেরই উচিত দই খাওয়া।

অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় কি

এ প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ সবাই। সবারই মনে চায় এই গরমে ঘরের মধ্যে অবস্থান করা। কিন্তু সব সময় ঘরের মধ্যে থাকতে চাইলে তা তো সম্ভব নয়। কেননা যারা ছাত্র তাদের স্কুলে যেতে হয়, যারা চাকরি করে তাদের অফিসে যেতে হয়, আবার যারা কৃষি কাজ করে তাদের মাঠে যেতে হয়। এ প্রচন্ড গরমের কারণে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। 

কারো হিট স্ট্রোক দেখা দেয় আবার কারো বদহজম হয়ে যায়। এছাড়াও সর্দি-কাশি,এলার্জি, ঘামাচি ইত্যাদি ইত্যাদি রোগ হয়ে থাকে। তবে যারা এ গরমে বেশি পরিশ্রম করে থাকে তাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তাই আমাদের সকলেরই জানা উচিত কিভাবে তীব্র গরম থেকে বেঁচে থাকা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে অতিরিক্ত গরম থেকে বেঁচে থাকা যায়?

অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার জন্য আমরা কয়েকটি টিপস আপনাদের কাছে তুলে ধরব। আশা করি এই টিপসগুলো মেনে চললে আপনি প্রচন্ড গরম থেকে কিছুটা মুক্তি পাবেন। নিচে গরম থেকে বাঁচার টিপসগুলো তুলে ধরা হলো;
  • খাবার স্যালাইন।
  • বিশুদ্ধ পানি পান।
  • সবুজ শাকসবজি খাওয়া।
  • আমিষ জাতীয় খাবার পরিহার।
  • টক জাতীয় ফল খাওয়া।
  • দই খাওয়া।
  • প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাইরে না যাওয়া।
  • প্রতিদিন নিয়মিত গোসল করা।
  • পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করা।
  • শারীরিক পরিশ্রম কম করা।
  • চা ও কফিপরিত্যাগ করা।
  • ধূমপান পরিত্যাগ করা।
  • অতিরিক্ত পারফিউম ব্যবহার না করা।
  • সব সময় শান্ত থাকা ।

শরীর গরম কিন্তু জ্বর নেই

শরীর গরম থাকা আমাদের অনেকের কাছেই একটি কমন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই এই শরীর গরম থাকার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কেউ মনে করে হয়তোবা আমার জ্বর হয়েছে কিন্তু ডাক্তারের কাছে গেলে সেটা জ্বর ধরা পড়ে না। তাই অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে যে শরীর গরম কিন্তু জ্বর নেই তার কারণ কি? জ্বর ব্যতীত বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীর গরম থাকতে পারে। 

আজকের আর্টিকেলে জ্বর না থাকা সত্ত্বেও শরীর কেন গরম থাকে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন দেখে নিই কেন জ্বর না হওয়া সত্ত্বেও শরীর গরম থাকে? সাধারণত আমাদের দেহের তাপমাত্রা ৯৮.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যখন আমাদের জ্বর হয় তখন দেহের তাপমাত্রা ৯৯ ফারেনহাইট এর উপরে থাকে। 

তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে দেহের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি হয়। তখন আমাদের মনে হয় যে আমাদের জ্বর হয়েছে কিন্তু আসলে জ্বর হয় না। নিচে জ্বর ব্যতীত কি কি কারনে শরীর গরম থাকে তা তুলে ধরা হলো;
  • পরিবেশ ও জীবনধারার কারণে।
  • দুশ্চিন্তায়।
  • হরমোন জনিত কারণে।
  • হাইপার থাইরয়েডিজমের কারণে।
পরিবেশ ও জীবনধারার কারণেঃ আপনার পরিবেশ এবং জীবন ধারার কারণে দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে। কেউ যদি অত্যাধিক পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ করে থাকে তাহলে তার শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং গরম অনুভব হয়। আবার গরম পানীয় এবং গরম খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে আমাদের মনে হয় যে জ্বর হয়েছে কিন্তু সত্যিকার অর্থে তা হয় না।

অত্যাধিক পরিমাণে মসলা দেওয়া খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের ভিতরে গরম অনুভব হয়। তাছাড়া ভুল তাপমাত্রা রিডিং এর ফলে ও আমাদের মনে হয় আমাদের জ্বর হয়েছে। ভুল তাপমাত্রা রিডিং বলতে বুঝানো হচ্ছে আপনি দেহের তাপমাত্রা মাপার পরের সেই তাপমাত্রা দেখতে আপনার ভুল হয়েছে। যার কারণে আপনার মনে হতে পারে আপনার জ্বর হয়েছে কিন্তু আসলে জ্বর হয় না।

দুশ্চিন্তাঃ অত্যাধিক পরিমাণে দুশ্চিন্তা করার কারণে আপনার শরীর গরম হতে পারে। দুশ্চিন্তার কারণে আমাদের উদ্বিগ্নবোধ হয়ে থাকে। এই উদ্বিগ্নবোধ শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বাড়িয়ে দেয় যার কারণে আমাদের শরীরে গরম অনুভব হয়। 

এছাড়াও ক্লান্তি, বিরক্তি, ডায়াবেটিস অথবা অস্থিরতার কারণে উদ্বেগের সৃষ্টি হতে পারে।যে সকল ব্যক্তির ডায়াবেটিস থাকে তাদের দেহের তাপমাত্রা মাঝে মাঝে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে যায়। ফলে শরীরে বেশি গরম অনুভব হয়ে থাকে।

হরমোন জনিত কারণঃ জ্বর না হওয়া সত্ত্বেও শরীর গরম হওয়ার কারন গুলোর মধ্যেও অন্যতম একটি হলো হরমোন জনিত কারণ। মূলত প্রাকৃতিক কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে যা বেশিরভাগ মহিলাদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। পরি মনপজ বা মনপজের কারনে শরীরে ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। 

এ ভিটামিন জনিত অভাবের কারণে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়। ফলে শরীরে গরম অনুভব যেটাকে আমরা জ্বর মনে করে থাকি। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় মেয়েদের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে।

হাইপার থাইরয়েডিজমের কারণেঃ আমাদের রক্ত প্রবাহে থাইরয়েড হরমোনের কারণে একটি অতিরিক্ত সক্রিয় থাইরয়েড গ্রন্থি রক্তের সাথে প্রবাহ হয়ে থাকে। এই অতিরিক্ত থাইরয়েড গ্রন্থি তাপ সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দেয় ফলের শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায় এবং শরীরে গরম অনুভব হয়। মূলত এ ধরনের সমস্যাকে হাইপার থাইরয়েডিজম বলা হয়। এই হাইপার থাইরয়েডিজমের কারণে ফ্লাসিং এবং অতিরিক্ত ঘামও ঝরতে পারে।

মাথা ও শরীর গরম হওয়ার কারণ

আমাদের মধ্যে অনেকেরই যেকোনো সময় মাথা গরম হয়ে যায়। আবার শরীর গরম হওয়ার কারণে ও মাথা গরম হয়ে থাকে। উপরের আর্টিকেলে আমরা শরীর গরম থাকার কারণে আলোচনা করেছি। এই আর্টিকেলে মাথা গরম হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনা করব। বিভিন্ন কারণে হুটহাট করে মানুষের মাথা গরম হয়ে যেতে পারে। নিচে মাথা গরম হওয়ার কারণ তুলে ধরা হলো;
  • অতিরিক্ত কাজের চাপ।
  • ধৈর্য কম হওয়া।
  • শরীরের তাপমাত্রা পরিবর্তন।
  • অতিরিক্ত রাগ।
  • দুশ্চিন্তা।
  • অতিরিক্ত মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার।
অতিরিক্ত কাজের চাপঃ আমরা আমাদের জীবিকার তাগিদে কাজ করে থাকি। একেক মানুষ একেক রকম কাজ করে থাকে। প্রত্যেকটি কাজেই চাপ সহ্য করতে হয়। তবে মাঝের মধ্যে কাজের চাপ কাজের চাপ অধিক পরিমাণে বেড়ে যায়। 

এই অধিক পরিমাণ কাজের চাপের কারণে মানুষের মাথা গরম হয়ে যায় এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। তাই সবসময় আমাদের উচিত কাজের চাপ কম রাখার জন্য চেষ্টা করা এবং অতিরিক্ত কাজ জমা করে না রাখা।

ধৈর্য কম হওয়াঃ আমাদের মধ্যেও অনেক মানুষ হয়েছে যাদের ধৈর্য অনেক কম। এই ধৈর্য কম হওয়ার কারণে যখন সেই ব্যক্তি কোন কাজ করতে যায় তখন কাজ একটু এলোমেলো হলে সে ধৈর্য হারিয়ে ফেলে এবং তার মাথা গরম হয়ে যায়। তাই মাথা গরম হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ধৈর্য কম হওয়া।

শরীরের তাপমাত্রা পরিবর্তনঃ বিভিন্ন কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে যেকোনো সময় মানুষের মাথা গরম হয়ে যায়। তাই মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য শরীরের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।

অতিরিক্ত রাগঃ আমাদের সমাজে অনেক মানুষ রয়েছে যাদের রাগ অনেক বেশি হয়ে থাকে। এই অতিরিক্ত রাগের কারণে যেকোনো সময় তাদের মাথা গরম হয়ে যায়। তাই মাথা গরম হওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ হচ্ছে রাগ বেশি হওয়া। তাই মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য রাগ কমানো উচিত।

দুশ্চিন্তাঃ দুশ্চিন্তার কারণে মানুষের মাথা গরম হয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ বিভিন্ন কারণে দুশ্চিন্তা করে থাকে। এই দুশ্চিন্তা বেশি হয়ে থাকলে যেকোনো সময় মাথা গরম হয়ে যায়। তাইতো চিন্তা হলো মাথা গরম হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে একটি। আমাদের সকলেরই অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকা উচিত।

অতিরিক্ত মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারঃ বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ ছেলে মেয়েরাই মোবাইল অথবা কম্পিউটার ব্যবহারে আসক্ত হয়ে আছে। এই অধিক পরিমাণে মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করাই সেটা থেকে আগত আলো চোখমুখে এসে পড়ে ফলে চোখ এবং মাথার সমস্যা হয়। 

যার কারণে যেকোনো সময় তাদের মাথা গরম হয়ে যায় এবং মেজাজ সব সময় খিটখিটে থাকে। তাই আমাদের সকলেরই অতিরিক্ত মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করা উচিত নয়।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। কেননা অতিরিক্ত গরমের ফলে হিট স্ট্রোক এর কারণে মৃত্যুর আশঙ্কা বা মিথ্যা হতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন গরমের সময় ঠান্ডা স্থানে বসবাস করার। এছাড়াও যেসব খাবার খেলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় সেসব খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url