সিলেটের ৮টি দর্শনীয় স্থানগুলো

বাংলাদেশের সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থানপ্রাকৃতিক সৌন্দর্যে লীলাভূমি আমাদের এই সবুজে ভরা বাংলাদেশ। আমাদের এই দেশে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। আমাদের দেশের এই দর্শনীয় স্থানগুলো দেখার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক আসে। বর্তমান বাংলাদেশে ৮ টি বিভাগ রয়েছে। এই ৮ টি বিভাগেই রয়েছে আলাদা আলাদা দর্শনীয় স্থান। দর্শনীয় স্থানে ভরপুর বিভাগের মধ্য সবার উপরেই রয়েছে সিলেট বিভাগ। সিলেট বিভাগে রয়েছে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা যেগুলো দেখলে মন জুড়াইয়া যায়। 
সিলেটের ৮টি দর্শনীয় স্থানগুলো
অনেকে সিলেটের দর্শনের স্থানগুলো সম্পর্কে জানতে চায়। যারা সিলেটের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে চায় আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু করা যাক,

সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা

অসংখ্য দর্শনে স্থানে ভরপুর আমাদের এই বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মধ্যে যে সকল জায়গায় দর্শনীয় স্থান রয়েছে তাদের মধ্যে সিলেট বিভাগ অন্যতম। দর্শনে স্থানের কথা বললেই সবার আগে মাথায় আসে সিলেটের কথা। সিলেটে রয়েছে ভ্রমণ করার মত অনেক সুন্দর জায়গা। আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন যারা সিলেটে ভ্রমণ করতে চান। আবার অনেকে রয়েছেন সিলেটের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর জায়গা ভ্রমন করতে চান। 

আপনিও যদি সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি এবং সেই সুন্দর জায়গা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি? প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে লীলাভূমি এবং দর্শনীয় স্থানে ভরপুর আমাদের দেশের সিলেট বিভাগ। সিলেটের এই অসংখ্য দর্শনে স্থানগুলোর মধ্য থেকে সবচেয়ে সুন্দর জায়গা বা দর্শনীয় স্থানটি হল জাফলং। 

সিলেটের এই জাফলং প্রকৃতি কন্যা হিসেবে সারা দেশে পরিচিত। জাফলং সিলেটের খাসিয়া জয়ন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। শুধু সিলেটের মধ্যেই নয় সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যেই সবচেয়ে আকর্ষণীয় ধানের তালিকায় রয়েছে সিলেটের জাফলং। জাফলং এত আকর্ষণীয় হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে পিয়াইন নদীর পার দেশে স্তরে স্তরে বিছানো পাথর। জাফলং এর মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে পিয়াইন নদী। অর্থাৎ পিয়াইন নদীর উপরেই জাফলং অবস্থিত। 

ভারতের টিলা এবং ডাউকি পাহাড় থেকে অনবরত ঝরনা বা জলপ্রপাত অবিরাম প্রবাহমান হয়ে চলেছে জাফলং এর উপর দিয়ে। এছাড়াও ডাউকি ঝুলন্ত ব্রিজ, গহীন অরন্যর উঁচু পাহাড়, স্বচ্ছ হিমেল পানির পিয়াইন এবং পাহাড়ের উপরের বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য গাছ-গাছালি এই জাফলং কে আরো সুন্দর করে তুলেছে। সবকিছু মিলিয়ে সিলেটের মধ্যে যে সকল দর্শনীয় স্থান রয়েছে তাদের মধ্যে জাফলং সবচেয়ে সুন্দর।

এছাড়াও সিলেট শহর থেকে জাফলং যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থানের দেখা পাওয়া যায়।নিচে কয়েকটি দর্শনীয় স্থানের নাম তুলে ধরা হলো যেগুলো সিলেট থেকে জাফলং যাওয়ার পথে আপনারা দেখতে পাবেন।

  • হযরত শাহ পরান রহমাতুল্লাহ এর মাজার
  • সবুজ পাহাড়
  • সিলেট আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট
  • লালাখাল
  • ডাউকি ল্যান্ড বর্ডার
  • বিশাল হাওর
  • সারি সারি চা বাগান
  • সুন্দর পাথরের নদী যার পানি খুবই স্বচ্ছ
  • জাফলং জিরো পয়েন্ট
  • মায়াবী ঝরনা
  • ডাউকি ঝুলন্ত ব্রিজ

শীতকালে সিলেটের দর্শনীয় স্থান

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। আমাদের দেশের ঋতু যেমন বৈচিত্র্যময় তেমনি ঋতু অনুযায়ী দেশের দর্শনীয় স্থানগুলো বৈচিত্র্যময়। আমাদের দেশে প্রত্যেকটি ঋতুতে আলাদা আলাদা পরিবেশ বা জলবায়ু দেখা যায়। তেমনি আলাদা আলাদা ঋতুতে দেশের দর্শনে স্থানগুলোও আলাদা আলাদা রূপ ধারণ করে।বর্তমান বাংলাদেশে দর্শনীয় স্থানে ভরপুর জায়গাগুলোর মধ্যে সিলেট অন্যতম। 

আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছে যারা শীতকালে ভ্রমণ করতে পছন্দ করে। আবার অনেকেই জানতে চায় শীতকালে সিলেটে ভ্রমণ করার মত দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে। তাই আমরা আজকের এই আর্টিকেলে শীতকালের সিলেটে ভ্রমণ করার জন্য সেরা কিছু দর্শনের স্থান সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। নিচে শীতকালে ভ্রমণ করার মত সিলেটের কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ

জাফলংঃ জাফলং কে সিলেটের প্রাকৃতির কন্যা বলা হয়। কেউ যদি সিলেটে ভ্রমণ করতে চায় তাহলে সবার আগে সে জাফলং ভ্রমণ করতে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হয়ে আছে সিলেটের এই জাফলং। এখানে রয়েছে ভারতের টিলা এবং ডাউকি পাহাড় থেকে অনবরত বয়ে চলা জলপ্রপাত।সিলেটের এই জাফলং নামক দর্শনীয় স্থানে সব সময় পানি থাকে। সারা বছর পানি থাকার কারণে আপনি যখন ইচ্ছা জাফলং ভ্রমন করতে পারবেন। 

লালাখাল ভ্রমণঃ লালখাল সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত। সিলেটের মধ্যে যে সকল দর্শনে স্থান রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো এই লালখাল। লালখাল জনপ্রিয় হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে সেখানকার স্বচ্ছ নীল পানি। ভারতের চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে এই নদীর উৎপত্তি হয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

জয়ন্তী পাহাড় থেকে অনবরত জলপ্রপাত বয়ে চলেছে এই লাল খাল এর উপর দিয়ে। তাই এখানে সারা বছর নীল স্বচ্ছ পানি দেখা যায়। এই নীল স্বচ্ছ প্রাণী দেখার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক আসে। আপনি সারা বছরের যে কোন সময় লাল খাল ভ্রমণ করতে পারবেন। 

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতঃ আমাদের দেশের যে সকল জলপ্রপাতে সারাবছর পানি থাকে তাদের মধ্যে অন্যতম সেরা জলপ্রপাত হলো মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত। এখানে সারা বছর পানি থাকার কারণে ভ্রমন করার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময়ের প্রয়োজন হয় না। আপনি চাইলে শীতকালে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে ভ্রমণ করতে পারবেন। এছাড়াও মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের পাশে রয়েছে মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক এবং খাসিয়া পল্লীর মত বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান। তাই আপনি অনায়াসে শীতকালে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ভ্রমণ করতে পারবেন।

মালনিছড়া চা বাগানঃ সিলেট বিভাগের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে চা বাগান অন্যতম। আবার সিলেটে যে সকল চা বাগান রয়েছে তাদের মধ্যে মালনিছড়া চা বাগান উল্লেখযোগ্য। এই চা বাগান ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন এবং বৃহত্তম একটি চা বাগান। এছাড়াও মালনিছাড়া চা বাগানের আশেপাশে সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হারং,হুরং গুহা, লাক্কাতুরা চা বাগান সহ বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান। তাই আপনি চাইলে যে কোন সময় মালনিছড়া চা বাগানে ভ্রমণ করতে পারবেন।

সিলেট পর্যটন পার্ক

সিলেট শহরের মধ্যে বা সিলেট বিভাগের মধ্যে যে সকল পার্ক রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে সিলেট পর্যটন পার্ক। এটি শুধু সিলেট পর্যটন পার্ক নয় এটি সিলেট পর্যটন কেন্দ্র ও বটে। সিলেট পর্যটন পার্ক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়ানো। এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পার্কে যদি আপনি রাত্রে থাকতেও চান তাহলে এখানে আপনারা পেয়ে যাবেন হোটেল রিসোর্ট। সিলেট পর্যটন পার্ক মালনিছড়া চা বাগানের পার্শ্বে অবস্থিত। 

এখানে প্রবেশ করতে হলে প্রবেশ কি ৫০ টাকা। আপনি যদি এখানে রাতে থাকতে না চান বা শুধুমাত্র এই পর্যটন পার্কের ভিতরের ইকো পার্কটি ঘুরে দেখতে চান তাহলে আপনার প্রবেশ ফি মাত্র ৫০ টাকা। এই পার্কের মধ্যে রয়েছে কিছু জলপরীর মূর্তি, দোলনা, শিশুদের খেলনার রাইড ইত্যাদি। এই পর্যটন পার্ক টি জনপ্রিয় হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে এই পার্কের নিরিবিলি পরিবেশ। 

এই পার্কের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য গাছপালা যার কারণে পরিবেশ অনেক নিরিবিলি। সিলেটের এই পর্যটন পার্ক টি নিরিবিলি পরিবেশের হওয়ার কারণে যুবক-যুবতীদের কাছে অনেক পছন্দের। এছাড়াও যারা সিলেটের অন্য কোন স্থানে ঘুরতে আসে তারা রাত্রি যাপন করার জন্য এখানে আসে। সময় পেলে আপনিও এই পর্যটন পার্ক টি ঘুরে আসবেন।

সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলো 

সিলেট হল বাংলাদেশের মধ্যে এমন একটি জায়গা যেখানে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য বিনোদন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আবার এই বিনোদনের কথা চিন্তা করলে সবার আগে মাথায় আসে ভ্রমণের কথা। কেননা ভ্রমণের মধ্যে রয়েছে অসম্ভব মানসিক শান্তি। বাংলাদেশে যেসব দর্শনীয় স্থান রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে সিলেটে। আজকের এই আর্টিকেলের আমরা আপনাদের সামনে সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরব।

সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো  হলঃ 

জাফলং, মালনিছড়া চা বাগান, হযরত শাহজালাল(রাঃ) মাজার, লালাখাল, বিছানাকান্দ, হযরত শাহপরান(রঃ) মাজার, রায়েরগাও হাওর, তামাবিল, ভোলাগঞ্জ, লোহাছড়া চা বাগান, লক্ষণছাড়া, রাতারগুল হাওর, কুলুম ছড়া, লাক্কাতুরা চা বাগান, সংগ্রাম পঞ্জি ঝর্ণা, রাংপানি, জুগির কান্দি মায়াবন ইত্যাদি। নিচে জনপ্রিয় কিছু স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
  • জুগির কান্দি মায়াবন।
  • রাংপানি।
  • জাফলং, মালনিছড়া চা বাগান।
  • হযরত শাহজালাল(রাঃ) মাজার।
  • সংগ্রাম পঞ্জি ঝর্ণা।
  • হযরত শাহপরান(রঃ) মাজার।
  • জাফলং।
  • লালাখাল।

জুগির কান্দি মায়াবনঃ সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত এই জুগির কান্দি মায়াবন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভরপুর হয়ে আছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মহিমান্বিত গোয়েনহাট উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়নের জুগির কান্দি হাওরে অবস্থিত এই বনটিকে স্থায়ীভাবে নাম দেওয়া হয়েছে মায়াবন। এই মায়াবন এক হাজার একক ভূমি জুড়ে বিস্তৃত হয়ে আছে। এই মায়াবনকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলাবণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। 

রাংপানিঃ সিলেট শহর থেকে ৫৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জয়ন্তপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি এলাকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই রাংপানি নামক দর্শনীয় স্থানটি অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর স্থানটি মানুষের মনকে আকৃষ্ট করেছে বলে আশেপাশের লোকজন এই স্থানকে শ্রীপুর নাম দিয়েছে। মেঘালয়ের জয়ন্তা পাহাড় থেকে রংহং কং নামক জলপ্রপাত সারাবছর এখানে বয়ে চলেছে। 

মালনিছড়া চা বাগানঃ সিলেট শহরে অবস্থিত এই চা বাগান টি বাংলাদেশ তথা ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় এবং প্রাচীন চা বাগান। সবচেয়ে প্রাচীনতম এই চা বাগানটি সিলেট জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত। এই চা বাগানে সৌন্দর্য দেখার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক এখানে আসে। 

হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজারঃ হযরত শাহজালাল(রঃ) ছিলেন উপমহাদেশের একজন বিখ্যাত ব্যক্তি তথা একজন বিখ্যাত দরবেশ এবং পীর। বর্তমান সিলেটে আগে ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলনা। হযরত শাহজালাল(রঃ) এর হাত ধরে সিলেটে ইসলাম প্রচার হয়। এই বিখ্যাত ব্যক্তির মাজার দেখতে বা আমাদের জিয়ারত করার জন্য অসংখ্য মানুষ প্রতিবছর সেখানে যেয়ে থাকে।

সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণাঃ সংগ্রামপুঞ্জের ঝরনাটি সিলেট জেলার অন্যতম একটি ঝর্ণা। এছাড়াও সিলেটে রয়েছে মাদককুন্ড ঝরনা, পরি কুন্ড ঝর্ণা, সহ আরো বেশ কয়েকটি ঝর্ণা। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে অল্প কিছু রাস্তা অতিক্রম করলে ভারতের সীমান্তে পড়েছে এই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা। তবে বাংলাদেশের মানুষেরা চাইলে বিএসএফের পাহারায় এই ঝর্ণার চূড়ায় উঠতে পারবে। 

হযরত শাহপরান(রঃ) মাজারঃ হযরত শাহজালাল রহমাতুল্লাহ এর মতই একজন বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন হযরত শাহপরান রাহমাতুল্লাহ। হযরত শাহজালাল রহমাতুল্লাহ এর ভাগ্নে ছিলেন হযরত শাহপরান রাহমাতুল্লাহ। হযরত শাহপরান রহমাতুল্লাহ ছিলেন একজন বিখ্যাত সাধক পুরুষ। সিলেট শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে দক্ষিণ গাছ পরাগনায় খাদিম নগরে খানকা স্থাপন করে তিনি আধ্যাত্মিক সাধনা শুরু করেছিলেন বহু বছর আগে। তারপর তিনি মৃত্যুবরণ করলে তাকে একটি বড় বৃক্ষের নিচে দাফন  করানো হয়। এই বিখ্যাত ব্যক্তির মাজারটি দেখার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ সেখানে যেয়ে থাকে। 

আরও পড়ুনঃ পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ইতিহাস সম্পর্কে  বিস্তারিত জানুন

জাফলংঃ জাফলং কে সিলেটের প্রাকৃতির কন্যা বলা হয়। কেউ যদি সিলেটে ভ্রমণ করতে চায় তাহলে সবার আগে সে জাফলং ভ্রমণ করতে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হয়ে আছে সিলেটের এই জাফলং। এখানে রয়েছে ভারতের টিলা এবং ডাউকি পাহাড় থেকে অনবরত বয়ে চলা জলপ্রপাত।সিলেটের এই জাফলং নামক দর্শনীয় স্থানে সব সময় পানি থাকে। সারা বছর পানি থাকার কারণে আপনি যখন ইচ্ছা জাফলং ভ্রমন করতে পারবেন। 

লালাখালঃ লালখাল সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত। সিলেটের মধ্যে যে সকল দর্শনে স্থান রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো এই লালখাল। লালখাল জনপ্রিয় হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে সেখানকার স্বচ্ছ নীল পানি। ভারতের চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে এই নদীর উৎপত্তি হয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

জয়ন্তী পাহাড় থেকে অনবরত জলপ্রপাত বয়ে চলেছে এই লাল খাল এর উপর দিয়ে। তাই এখানে সারা বছর নীল স্বচ্ছ পানি দেখা যায়। এই নীল স্বচ্ছ প্রাণী দেখার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক আসে। আপনি সারা বছরের যে কোন সময় লাল খাল ভ্রমণ করতে পারবেন। 

জাফলং এর দর্শনীয় স্থান

জাফলং হল সিলেটের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে সুন্দর দর্শনীয় স্থান। জাফলং যতটা সুন্দর ততটাই জনপ্রিয়। জাফলং এর পাথর এবং সৌন্দর্য দেখার জন্য দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসে। সিলেট শহর থেকে জাফলং যাওয়ার পথে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থানের দেখা পাওয়া যায়। নিচে কয়েকটি দর্শনীয় স্থানের নাম তুলে ধরা হলো যেগুলো সিলেট থেকে জাফলং যাওয়ার পথে আপনারা দেখতে পাবেন।

  • হযরত শাহ পরান রহমাতুল্লাহ এর মাজার
  • সবুজ পাহাড়
  • সিলেট আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট
  • লালাখাল
  • ডাউকি ল্যান্ড বর্ডার
  • বিশাল হাওর
  • সারি সারি চা বাগান
  • সুন্দর পাথরের নদী যার পানি খুবই স্বচ্ছ
  • জাফলং জিরো পয়েন্ট
  • মায়াবী ঝরনা
  • ডাউকি ঝুলন্ত ব্রিজ

জাফলং কিসের জন্য বিখ্যাত

জাফলং কিসের জন্য বিখ্যাত? এই কথাটি আমাদের অনেকের মাথায় আসে। কেননা জাফলং ভ্রমণের জন্য একটি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। এ বিখ্যাত স্থানটির মূল আকর্ষণ কি বা কি কারনে জাফলং এতটা জনপ্রিয়। আপনিও যদি এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তাহলে আপনাকে জানিয়ে রাখি জাফলং ভ্রমণকারীদের কাছে পাথরের জন্য বিখ্যাত এবং পাথরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্বচ্ছ পানি যেগুলো জয়ন্ত পাহাড় থেকে ঝরনার মাধ্যমে নেমে আসতেছে । পাথরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্বচ্ছ পানির স্রোত যা দেখলে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। জাফলং এর সৌন্দর্য শীতকাল বা বর্ষাকালে বহু গুনে বেড়ে যায়।

সিলেটের বিখ্যাত খাবার

সিলেট জেলা যেমন বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের জন্য বিখ্যাত তেমনি আবার বিভিন্ন খাবারের জন্যও বিখ্যাত।আপনারা অনেকেই জানতে চান সিলেটের বিখ্যাত খাবার কি। আবার অনেকে সিলেটে ভ্রমণ করতে যেয়ে সিলেটের বিখ্যাত খাবার খেতে চান। যারা সিলেটের বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য এই আর্টিকেলে আমরা সিলেটের বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন সিলেটের বিখ্যাত খাবারটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক,

সিলেটের বিখ্যাত খাবারটির নাম হচ্ছে বিরাইন ভাত। এই বিরাইন ভাত এক ধরনের আঠালো চাল দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। যা একটি বিশেষ ধরনের চাল। এই বিশেষ ধরনের আঠালো সুগন্ধিযুক্ত চালশুধুমাত্র সিলেট জেলাতেই পাওয়া যায়। এই আঠালো চাল দিয়ে তৈরি বিরাইন ভাত ভাজা মাছ, মাংস, কাবাব, ক্ষীরসা, রসমালাই,খেজুর, গুড় ইত্যাদি দিয়ে ও রান্না করা যায় যা শুধুমাত্র সিলেটবাসীরাই করে থাকে। সিলেটের এই খাবারটি অত্যন্ত সুস্বাদু।

আপনারা যারা সিলেটে ভ্রমণ করতে যাবেন তারা অবশ্যই এই খাবারটি একবার খেয়ে আসবেন।এছাড়াও সিলেটের সবথেকে বিখ্যাত হচ্ছে সাত রংয়ের চা। এই চা টি একমাত্র সিলেটেই পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে এই সাত রংয়ের চা এর জন্যই সিলেটকে বিখ্যাত বলা হয়। আশা করি আপনারা সিলেটের বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

শেষ কথা

আমার দেখা বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর্য ও প্রকৃতিক নির্ভর একটি স্থান সিলেট। সিলেটের এমন কিছু স্থান রয়েছে তা সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সিলেটে পাহাড়, ঝর্ণা ও চা বাগানের প্রেমে পড়বে না এমন পর্যটক খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনারা যদি সিলেটে যেতে চান তাহলে অবশ্যই সঠিকভাবে খোঁজখবর নিয়ে যাবেন। আমরাও সিলেট সম্পর্কে সঠিক তথ্য ও ধারণা আজকের লেখার মাধ্যমে আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url