ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম - ২০২৪

আপনারা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে আপনাদের জন্য ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এর পাশাপাশি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে, অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। তাই আপনারা বিস্তারিত জানতে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম - ২০২৪ আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন।
ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম - ২০২৪
যেহেতু আমাদের সবারই ব্যাংক একাউন্ট অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা উচিত। একাউন্ট সম্পর্কে জানা থাকলে খুব সহজেই একাউন্ট খুলতে পারবেন এবং অন্যদেরও সহযোগিতা করতে পারবেন। তাই দেরি না করে পড়ে ফেলুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম - ২০২৪ আর্টিকেলটি।

ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার এবং কি কি

সাধারণত ব্যাংক একাউন্ট ৪ প্রকার। তা হলো;
  • চলতি হিসাব বা কারেন্ট একাউন্ট ( Current Account)
  • সঞ্চয় একাউন্ট বা সেভিং একাউন্ট (Saving Account)
  • পুনর্নবীকরণ ডিপোজিট একাউন্ট (Recurring Deposit Account)
  • ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট ( Fixed Deposit Account)
চলতি হিসাব বা কারেন্ট একাউন্টঃ যেকোনো ব্যক্তি নিজের নামে চলতি হিসাব একাউন্ট খুলতে পারবে। এ ধরনের একাউন্ট সাধারণত ব্যক্তিগত ব্যবসা, অংশীদারিত্ব ব্যবসা, পাবলিক সংস্থা, কোম্পানী,ফার্ম এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য এই একাউন্ট গুলো উপযুক্ত। এ ধরনের একাউন্ট গুলো সাধারণত জমা করা বা সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয় না। এ ধরনের ডিপোজিট তরল ডিপোজিট যা লেনদেনের বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট থাকেনা। 

এই একাউন্টগুলোতে লেনদেনের উপর কোন সুদ দেওয়া হয় না। বরং ব্যাংক গুলি কারেন্ট একাউন্ট এর উপর পরিষেবা চার্জ ধার্য করে থাকে। এই একাউন্ট গুলোর কোন নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই। চলতি একাউন্ট বা কারেন্ট একাউন্ট করার ফলে আপনি যা যা পাবেন তা হল নগদ কার্ড, ডেবিট কার্ড, গ্যারান্টি কার্ড এবং চেক বই দিবে। এছাড়াও ওভারড্রাফটের সুবিধা দিয়ে থাকেন।

সঞ্চয় একাউন্ট বা সেভিং একাউন্টঃ সেভিং একাউন্ট হলো যা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অর্থ সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। যেকোনো ব্যক্তি সঞ্চয় একাউন্ট একক ভাবে বা যৌথভাবে খুলতে পারবে। সঞ্চয় একাউন্ট সাধারণত পেনশনকারী, বেতনভুক্ত ব্যক্তি এবং শিক্ষার্থীরা করে থাকেন। ব্যাংকগুলি সঞ্চয়ী একাউন্ট করলে সঞ্চয়ের অর্থের উপর সুদ প্রদান করে থাকেন। দিন, সপ্তাহ, মাসিক এবং বার্ষিক ভিত্তিতে সুদের হার হতে পারে। সঞ্চয়ী একাউন্ট সাধারণত চেক প্রদানের সুবিধা বহন করে।

পুনর্নবীকরণ ডিপোজিট একাউন্টঃ পুনর্নবীকরণ ডিপোজিট একাউন্ট একটি নির্দিষ্ট সময়ের উপর অর্থ জমা করা হয় এবং উচ্চ সুদ গ্রহনের উদ্দেশ্যে পুনর্নবীকরণ ডিপোজিট একাউন্ট খোলা হয়ে থাকে। এই একাউন্টগুলিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রতি মাসে জমা করা হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে গ্রাহক তার প্রাপ্তি অর্থ সুদ সহ উত্তোলন করে থাকেন। এ ডিপোজিটের মেয়াদ হয়ে থাকে ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত।

ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্টঃ ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা করে রাখতে হয়। এই জমাকৃত অর্থ মেয়াদ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত উত্তোলন করা যায় না। তবে প্রয়োজনে অর্থ জমা দানকারী ফি প্রদান করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফিক্সড ডিপোজিট বাতিল করার জন্য অনুরোধ করতে পারেন।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

অনেকেই আছেন ব্যাংক একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় এবং কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগে তা সম্পর্কে জানেনা। যখন ব্যাংক একাউন্ট খোলার প্রয়োজন পরে তখন তারা তাদের ফ্যামিলির কেউ এ বিষয়ে ধারণা থাকলে বা যারা ব্যাংক একাউন্ট বিষয়ে বিজ্ঞ তাদের সহযোগিতা নিয়ে একাউন্ট খুলে থাকেন। যেহেতু ব্যাংক একাউন্ট বিষয় সবারই অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তাই বিষয়ে কম - বেশি সবারই ধারণা থাকা প্রয়োজন। তাহলে আপনারা অন্যের সহযোগিতা ছাড়াই নিজেরাই একাউন্ট খুলতে পারবেন। এখন চলুন ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে জেনে নেই।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র + নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্র জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি থেকে দুটি উপস্থাপন করতে হবে।
  • দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি + নমিনির ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
  • বিজনেস রিলেটেড অ্যাকাউন্ট হলে অবশ্যই ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স এবং আয়ের উৎস সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করতে হবে।
  • যে কোন অ্যাকাউন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে ওপেনিং ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। আপনি চাইলে ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
ফরম পূরণ করার পর টাকা জমা দিতে হবে। ব্যাংক অনুযায়ী জমা দেওয়া টাকার পরিমান আলাদা হয়ে থাকে। এবং সঞ্চয়ী এবং চলতি হিসাবের জন্য ১০০০-২০০০ টাকা লাগতে পারে। ডিপিএস এর জন্য কিস্তি সমূহ পরিমাণ ও এফডিআর এর জন্য এফডিআর সমপরিমাণ টাকা লাগবে।

মোবাইল দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

ব্যাংকে না গিয়ে অনলাইনে ঘরে বসেই আপনি মোবাইল দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন। এতে ব্যাংকে গিয়ে লাইন ধরে একাউন্ট খুলতে হবে না।সময়ও কম লাগবে কাজও তাড়াতাড়ি হবে। তার জন্য প্রয়োজন সঠিক ধারণা। তাই আপনাদের সুবিধার্থে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম - ২০২৪ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কিভাবে মোবাইল দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায় তার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই। 

অনলাইনে ই - কেওয়াইসির মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে সব ব্যাংকই কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের দরকার হবে। তাই এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ছবি স্ক্যান করে বা ছবি তুলে রেখে দিন। মোবাইল দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য যা যা করতে হবে তা হলো;
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনের এবং পিছনের পরিষ্কার ছবি অথবা পরিচয়পত্র না থাকলে পাসপোর্ট অথবা জন্ম সনদ।
  • আপনার নমনির জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনের এবং পিছনের পরিষ্কার ছবি অথবা পরিচয়পত্র না থাকলে পাসপোর্ট অথবা জন্ম সনদ এর ছবি।
  • নমিনিরএক কপি ছবি
  • একাউন্ট খোলার আগে নমিনি নির্ধারণ করে উনার সকল তথ্য সংগ্রহ করে রাখুন।
  • আপনার পরিচয় বহন করতে বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানি বিল সহ অন্য ব্যাংকের স্টেটমেন্ট যেখানে আপনার পরিপূর্ণ পরিচয় বা ঠিকানা লেখা থাকবে এমন কাগজের ছবি লাগবে।
  • ই - টিন সার্টিফিকেট যদি থাকে তার ছবি। এবং
  • আপনার ছবি সরাসরি স্মার্ট ফোন থেকে তুলতে হবে। আপনার ছবি তোলার সময় চোখের পাতা খুলে বন্ধ করতে বলবে। আপনি যে নিজেই এই একাউন্ট খুলতেছেন তার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য।
এসব ডকুমেন্ট ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক তাদের নিয়ম অনুসারে আলাদা কিছু কাগজপত্র প্রদান করার জন্য বলতে পারে। যেমন ধরুন আপনার অর্থের উৎস কি তার প্রমাণ প্রদান করতে হবে। উপরের সবগুলো কাগজপত্র আপনার যদি থাকে তাহলে আপনি অনলাইনে মোবাইল দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে প্রস্তুত।

অনলাইনে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনি অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানা থাকলে ঘরে বসে খুব সহজেই ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন। আপনারা জেনে থাকবেন বাংলাদেশ প্রথম ডাচ বাংলা ব্যাংক অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার সেবা চালু করেন। পরবর্তীতে অন্যান্য ব্যাংকগুলো অনলাইন সেবা চালু করতে থাকে। ২০২০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সংক্রান্ত নীতিমালা প্রদান করার পর থেকে বাংলাদেশের অনেক ব্যাংক গুলো অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার এই সুবিধা চালু করেছে।

অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলা খুব সহজ। যা ব্যাংকে গিয়ে লাইন ধরে তারপর একটা বিশাল কাগজের ফরম পূরণ করতে হয় না এবং বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদান করতে হয় না। এখন চলুন জেনে নেই, বাংলাদেশে যেসব ব্যাংক অনলাইনে একাউন্ট খোলার সেবা চালু করেছে সেগুলোর নাম এবং অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।

তবে প্রতিটি ব্যাংকের ই অনলাইনে একাউন্ট খোলার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম ও পদ্ধতি, সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট ভিন্ন হয়। আপনাকে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য সে ব্যাংকের অ্যাপস বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে একাউন্ট খুলতে হবে এবং আপনাকে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য সে ব্যাংকের নিয়ম অনুসরণ করে কাজ করতে হবে।
  • সোনালী ব্যাংক
  • ডাচ বাংলা ব্যাংক
  • ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
  • আইএফআইসি ব্যাংক
  • ব্যাংক এশিয়া একাউন্ট
  • মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক
  • ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক
  • প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড
  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
  • সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড
  • ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড
  • সিটি ব্যাংক লিমিটেড
সোনালী ব্যাংকঃ সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট করার জন্য সোনালী ই-সেবা অ্যাপ থেকে একাউন্ট খোলা যায়। তবে ইন্টারনেট ব্যাংকিং করার জন্য সোনালী ই ওয়ালেট অ্যাপ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এ পদ্ধতিতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। BEFTN করে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায়। সোনালী ব্যাংক একাউন্ট করার জন্য অনলাইনে আবেদন করলেও সেই পেপার গুলো নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে সাবমিট করতে হয়।

ডাচ বাংলা ব্যাংকঃ অনলাইনে আপনাকে ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য যা যা করতে হবে। প্রথমে Nexus Pay অ্যাপ ডাউনলোড করে তারপর রেজিস্ট্রেশন করে স্টেপ বাই স্টেপ পদ্ধতি অনুসরণ করে একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডঃ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড অনলাইনে একাউন্ট খোলার জন্য সেলফিনের মাধ্যমে খুব সহজে স্টেপ বাই স্টেপ পদ্ধতি অনুসরণ করে একাউন্ট খুলতে পারবেন। এছাড়াও আপনি সেলফিনের মাধ্যমে ডিপিএস, এফডিআর, এবং স্টুডেন্ট একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

আইএফআইসি ব্যাংকঃ আইএফআইসি ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য নির্দিষ্ট সফটওয়্যার ডাউনলোড করার প্রয়োজন পড়ে না। আপনি আইএফআইসি ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়ে খুব সহজেই একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। এই ব্যাংকের সুবিধা হল বাংলাদেশের সব ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

ব্যাংক এশিয়া একাউন্টঃ আপনি যদি এশিয়া ব্যাংকে একাউন্ট করতে চান তাহলে এশিয়া ব্যাংকের ওয়েবসাইট গিয়ে আপনার নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট দিয়ে সহজেই একাউন্ট খুলতে পারবেন। তবে অনলাইনে একাউন্ট খোলার আবেদন করলেও পরবর্তীতে সেই পেপারস গুলো ব্যাংকে গিয়ে সাবমিট করতে হবে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকঃ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ওয়েব সাইটে গিয়ে স্টেপ বাই স্টেপ পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনার ডকুমেন্ট প্রদান করার মাধ্যমে একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকঃ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে চাইলে তাদের নির্দিষ্ট অ্যাপ 'ইউক্লিক' ডাউনলোড করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি খুব সহজেই একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডঃ আপনি যদি প্রাইম ব্যাংকে একাউন্ট করতে চান তাহলে প্রাইম ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট দিয়ে খুব সহজে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডঃ আপনি যদি ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট করতে চান তাহলে একাউন্ট তৈরি করার জন্য ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে খুব সহজে একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডঃ সাউথইস্ট ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে চাইলে। সাউথইস্ট ব্যাংকের অ্যাপস ইন্সটল করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে স্টেপ বাই স্টেপ পদ্ধতি অনুসরণ করার মাধ্যমে সাউথইস্ট ব্যাংক এ একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডঃ অনলাইনে মাধ্যমে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড এ একাউন্ট তৈরি করতে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে 'এন বি এল' অ্যাপ। এই অ্যাপ ইন্সটল করে রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমে অল্প সময়ে খুব সহজে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।

সিটি ব্যাংক লিমিটেডঃ আপনি ঘরে বসে অনলাইনে খুব সহজেই সিটি ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। তার জন্য আপনাকে সিটি ব্যাংকের অ্যাপ 'Ekhoni' ডাউনলোড করে তারপর স্টেপ বাই স্টেপ পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

আমাদের একাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয় তখনই যখন আপনার আমার অর্থের নিরাপত্তার প্রয়োজন পড়ে বা নিজের অথবা ছেলে - মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অর্থ সঞ্চয় করে রাখার জন্য ব্যাংক একাউন্ট প্রয়োজন। আপনার যদি ব্যাংক একাউন্ট থাকে তাহলে খুব সহজেই লেনদেন করতে পারেন। এছাড়াও আপনার অর্থ সঞ্চয়ের বিনিময়ে আপনি কিছু লাভ পেয়ে থাকেন। চলুন জেনে নেই, ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।

আপনাকে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। তার মধ্যে প্রথম বিষয়টি হচ্ছে আপনি কি ধরনের ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চান। পরবর্তীতে সে অনুযায়ী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনার ডকুমেন্ট দিয়ে সেগুলো সংগ্রহ করতে হবে। এরপর আপনাকে উপস্থিতি থেকে নিজে বা ব্যাংক কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে।

তারপর ব্যাংক কর্মকর্তা আপনার ব্যাংক একাউন্ট খোলার সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করবেন। আপনার ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন তা হলো;
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র / পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন/ ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি।
  • আপনার সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • আপনি যাকে নমিনি করবেন তার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং এক কপি ছবি।
  • আপনি যে একাউন্ট খুলবেন সে একাউন্টের পূরণকৃত ফরম।
  • যদি স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট করেন তাহলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড/ সার্টিফিকেট
  • আপনার ঠিকানা প্রমাণ দিতে বিদ্যুৎ বিল/ টেলিফোন বিল/ আয়ের উৎসর ফটোকপি দিতে হবে।
  • টিন নাম্বার যদি থাকে তাহলে দিতে হবে।
 আপনি যেসব একাউন্ট খুলতে পারবেন। তা হল;
  • চলতি হিসাব বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ( Current Account)
  • সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট বা সেভিং অ্যাকাউন্ট (Saving Account)
  • পুনর্নবীকরণ ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট (Recurring Deposit Account)
  • ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট ( Fixed Deposit Account) এবং
  • স্টুডেন্ট একাউন্ট ( Student Account)
আপনাকে একাউন্ট খোলার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিতে হবে। আপনার অর্থকৃত জমা আপনার একাউন্টের উপর এবং ব্যাংকের উপর নির্ভর করে থাকে। তবে আপনি যে টাকা জমা দিবেন তা আপনার একাউন্টে জমা হয়ে থাকবে। একাউন্ট খোলার জন্য আলাদা কোন চার্জ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে

আপনি যদি অনলাইনে ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে একাউন্ট তৈরি করেন তাহলে আপনাকে কোন টাকা ডিপোজিট করতে হয় না। যখন আপনি আপনার একাউন্টে টাকা জমা করবেন তখন সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা একাউন্টে থেকে যাবে। যা আপনি উইথ ড্র করতে পারবেন না। অনলাইনে অ্যাকাউন্ট খোলার এই সুবিধা আছে যদি আপনার কাছে টাকা না থাকে তাহলেও আপনি অনলাইনে একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

কিন্তু পরবর্তীতে যখন একাউন্টে টাকা রাখবেন তখন অটোমেটিক্যালি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আপনার একাউন্টে জমা হয়ে থাকবে। তবে অনেক ব্যাংক আছে টাকা জমা করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেয়। আর যদি আপনি টাকা জমা দেওয়ার জন্য ব্যর্থ হন তাহলে একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য যখনই আপনি অনলাইনে একাউন্ট করবেন তখন চেষ্টা করবেন টাকা জমা দেওয়ার তাহলে আপনার একাউন্ট সচল থাকবে।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে? আপনি যদি ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত লাগবে। তাছাড়া আপনি ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন না।

 শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আপনারা জেনেছেন ব্যাংক একাউন্ট কত প্রকার,ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে, অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে তা সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, আপনারা সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হয়েছেন। এবং আপনাদের যদি প্রয়োজনে কিছু জানার থাকে তাহলে নিয়মিত ড্রিমস সেফ আইটির সাথেই থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url