মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি ২০২৪

কোন মাছ চাষে লাভ বেশি হবে জেনে নিনবর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু মাছ চাষের সঠিক ধারণা না থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে চাষিরা লাভবান হওয়ার চেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন বেশি হয়ে থাকে। তাই মাছ চাষ করার পূর্বে অবশ্যই মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা উচিত।
মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি ২০২৪
আজকে আমরা কিভাবে মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি নিতে হয় এবং কিভাবে, কি পরিমানে মাছের পোনা পুকুরের আয়তন গভীরতা অনুযায়ী মজুদ করতে হয় তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ছোট পুকুরে মাছ চাষ

আপনাদের প্রত্যেকেরই বাড়ির আশেপাশের ছোটখাটো পুকুর রয়েছে এই পুকুরগুলোতে কোন মাছ চাষ করলে সবচাইতে বেশি ভালো হবে এবং কিভাবে আপনি সে মাছ চাষ শুরু করতে পারবেন সে বিষয় সম্পর্কে আজকে আপনাদেরকে জানাবো। জলাশয়ে বা ছোট পুকুরে আপনি কিভাবে কম খরচে মাছ চাষ করে বেশি লাভবান হতে পারবেন তা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। 

ছোট পুকুরে সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ১০-১২ ইঞ্চি হয় এসব মাছগুলো ছাড়তে হবে এর চাইতে যেসব মাছ বড় হয় সেসব মাছ ছোট পুকুরে চাষ না করাই ভালো। কাজেই ছোট পুকুরে আমাদের দেশীয় যেগুলো মাছ রয়েছে সেগুলো মাছ চাষ করাই উত্তম। 

যেমন-শিং মাছ, মাগুর মাছ, টেংরা মাছ, পাবদা মাছ, বাটা মাছ, চিংড়ি মাছ, টাকি, কই মাছ ইত্যাদি জাতীয় মাছ চাষ করলে আপনি ভাল ফলাফল পাবেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ছোট পুকুরে আমরা কিভাবে মাছ চাষ শুরু করতে পারি। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই।
  • মাছ ছাড়ার পূর্বে অবশ্যই পুকুর ভালোভাবে নির্বাচন করতে হবে যদি আগাছা ডালপালা থাকে তাহলে সেগুলো পরিষ্কার করতে হবে।
  • এরপর চুন ও সার প্রয়োগ করে মাছ স্ট্রোক করতে হবে।
  • আপনি যদি ক্যাটফিস জাতীয় মাছ চাষ করতে চান যেমন- শিং মাছ, টেংরা মাছ, পাবদা এসব মাছ এককভাবে চাষ করাই ভালো।
  • যদি আপনি মিশ্র মাছ চাষ করতে চান তাহলে অন্যান্য মাছের পাশাপাশি অল্প সংখ্যক করে বড় মাছগুলো চাষ করতে পারেন। যেমন-সিলভার কাপ, রুই ইত্যাদি।
  • তবে লক্ষ্য রাখতে হবে পুকুরের সাইজ এবং গভীরতা এর উপর নির্ভর করে পুকুরে মাছ ছাড়তে হবে।
  • আপনি যদি এককভাবে ক্যাটফিশ পুকুরে চাষ করতে চান তাহলে শতক প্রতি ৪০০ পিস মাছ মজুদ করতে পারবেন।
  • আর যদি মিশ্র চাষ করতে চান তাহলে শতক প্রতি সিলভার কাপ ৩টি, রুই ৬টি এবং ৩টি করে কারফিউ মাছ দিতে পারেন।
  • আমরা জানি, ছোট পুকুরের গভীরতা অনেক কম হয় এজন্য ছোট মাছ চাষ করা উত্তম।
  • খাদ্য কথা যদি বলা যায় তাহলে ক্যাটফিসের জন্য কমার্সিয়াল ফিড খাওয়ালে ভালো হয়।
  • ছোটপুকুর বা জলাশয়ে প্রাকৃতিক খাদ্য বা জৈব সার দিয়ে অল্প খরচের মাধ্যমে আপনি মাছ চাষ করে বেশি আয় করতে পারবেন।

শতক প্রতি মাছ ছাড়ার নিয়ম

আপনারা যারা বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করতে চান তাদের অবশ্যই মাছ ছাড়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। এছাড়াও যারা মাছ চাষ করতে ইচ্ছুক তাদের এ বিষয়ে সঠিক ধারণা থাকলে মাছ চাষ করে লাভবান হতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন জেনে নেই, শতক প্রতি মাছ ছাড়ার নিয়ম সম্পর্কে। মোটামুটি যারা মাছ চাষের সাথে জড়িত আছেন তারা অবশ্যই এ বিষয়ে ধারণা আছে। 

শতক প্রতি কতটুকু মাছ ছাড়া ভালো তা নির্ভর করবে পুকুরের গভীরতা, আয়তন এবং মাছের জাত ও সাইজের উপর। মাছ ধরার পূর্বে পুকুর নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরপর মাছের জাত ও সাইজ নির্বাচন। আমাদের দেশের মাছ চাষিরা যেহেতু মিশ্র চাষ বেশি করে থাকেন এজন্য শতক প্রতি যেসব মাছ কি পরিমানে ছাড়া যায় এবং লক্ষ রাখতে হবে মাছের সাইজ যেন ২০০-৩০০ গ্রামের মধ্যে হয়। 

মিশ্র মাছ চাষের পরিমাণ হল; কার্প জাতীয় মাছ ১৫-৩০ পিস, রুই ৮-১০টি, কাতল ২পিস, ব্রিগেড ২ পিস, দেশি মাগুর ৫০ পিস অথবা টেংরা মাছ ২০০ পিস ইত্যাদি।

কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ

কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ করার পূর্বে অবশ্যই কার্প জাতীয় মাছের জাত সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। দেশি-বিদেশি ২ ধরনের কার্প জাতীয় মাছ গুলো হল; রুই, কাতল, কালিবাউশ, মৃগেল ইত্যাদি। অন্যদিকে বিদেশি কার্প জাতীয় মাছ গুলো হল; গ্রাস কার্প, ব্ল্যাক কার্প, সিলভার কার্প এবং ব্রিগেড ইত্যাদি। এসব মাছ সাধারণত তাদের স্বভাবগত কারণে পুকুরের ৩ স্তরে অবস্থান করে এবং খাদ্য গ্রহণ করে। 

যেমন-কাতল, সিলভার কার্প পুকুরের উপরের স্তরের খাবার খেয়ে থাকে। আবার রুই মাছ সাধারণত মধ্যস্তরের খাবার খেয়ে থাকে। নিম্ন স্তরে অবস্থান করে এবং খাবার গ্রহণ করে কালিবাউশ,মৃগেল ইত্যাদি। এসব মাছের চাহিদা বাজারে ব্যাপক থাকায় চাষ করলে লাভবান হওয়া সম্ভব। তাহলে এখন চলুন, কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

মাছ চাষ পদ্ধতি

পুকুর বা জলাশয় নির্বাচনঃ মাছ চাষের জন্য পুকুর বা জলাশয় নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে পুকুর নির্বাচন না করতে পারলে আপনি ঠিকমতো মাছ চাষ করতে পারবেন না এবং লাভবান হতে পারবেন না। পুকুর যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হলে আপনার খরচ কম হবে এবং অবশ্যই পুকুর যেন বন্যা মুক্ত থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পুকুরের পানির গভীরতা ২-৩ মিটার হয় এবং পুকুরের মাটি দো-আশ মাটি হলে খুবই ভালো হয় এবং কাঁদার পরিমাণ যেন কম থাকে। 

পুকুরের আশেপাশে বড় গাছপালা না থাকে এবং পুকুর যেন খোলামেলা হয় এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায়। সূর্যের আলো ৭-৮ ঘন্টা যেন পুকুরে পড়ে এমন জায়গায় পুকুর নির্বাচন করতে হবে। কেননা সূর্যের আলো সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে পুকুরে মাছের খাদ্য প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয় এবং পুকুরের বাতাস চলাচল করলে পানিতে অক্সিজেন দ্রবীভূত হয়।

পোনা মজুদঃ মিশ্র চাষ মাছ চাষের সবচেয়ে ভালো সুবিধা হলো পুকুরের সব স্তরের খাবার গ্রহণ করতে পারে যা সমানভাবে ব্যবহার হয় এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মজুদ করলেই যে বেশি লাভবান হওয়া যায় তা কিন্তু না। খাদ্য বা বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা করেনা এমন প্রজাতির দুই বা ততোধিক পোনা নির্বাচন করা উত্তম।

পুকুরের বিষাক্ত পরীক্ষাঃ পুকুরে পোনা ছাড়ার পূর্বে অবশ্যই পানিতে ওষুধের বিষক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। যখন দেখবেন পুকুরের পানির রং সবুজাভ, লালচে অথবা বাদামি সবুজ থাকলে পোনা মজুদ করার জন্য উপযুক্ত। আর যদি দেখেন পানির রং হালকা সবুজ, ঘন সবুজ, তামাটে লাল তাহলে কার্প জাতীয় মাছ চাষের জন্য প্রযোজ্য না।

কার্প মাছের খাদ্যঃ পুকুরের সাধারণত প্রাকৃতিক খাদ্যের উপর কমার্শিয়াল ফিড নির্ভর করে। মজুদ করা পুকুরে মাছের ওজনের ৩-৫ শতাংশ হারে খাদ্য ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আবার শীতকালে যেহেতু মাছের জৈবিক পরিপাক ক্রিয়া অনেক কমে যায় সেজন্য তাদের খাদ্য গ্রহণের মাত্রা অনেক কমে যায়। শীতকালে মাছের ওজনের শতকরা ১-২ভাগ হারে খাবার দিতে হয়। এছাড়াও খাদ্য সাথে খোল ব্যবহার করতে হয়।

মাছ চাষের আধুনিক পদ্ধতি

আমিষের অন্যতম উৎস হচ্ছে মাছ। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ থাকতেই হবে। কারণ আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে মাছের চাষ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মাছ চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। যেমন- একই পুকুরে বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করা যায়, এককভাবে মাছ চাষ করা যায় ইত্যাদি। আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে। তবে এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য চাষ করা মাছগুলো হল; কাতলা, রুই, মৃগেল, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, কালিবাউশ, ব্রিগেড, বিদেশি মাগুর, থাই পাঙ্গাস ইত্যাদি। 

এসব মাছ সাধারণত বেশি সংখ্যক চাষ করা যায় এবং পুকুরের সব স্তরের খাবার গ্রহণ করে। যা মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে চাহিদা থাকায় খুব সহজে সরবরাহ করা যায় এবং ভালো আয় করা সম্ভব হয়। তাহলে চলুন মাছ চাষের পদ্ধতি বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেই।

পুকুর প্রস্তুতি ও নির্বাচনঃ মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন এবং প্রস্তুতি নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা পুকুর উপযুক্ত না হলে এবং সঠিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ না করলে আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। পুকুর প্রস্তুতির জন্য যা যা করতে পারেন তাহল;

পুকুর প্রস্তুতিঃ
  • পুকুরের চারিদিকের পাড় ও তলা মেরামত করা।
  • পুকুরপাড়ের গাছপালা ও আগাছা পরিষ্কার করা।
  • জলজ আগাছা দূর করা।
  • পুকুরে যেন রাক্ষসী মাছ না থাকে সেদিকে নজর দেওয়া। এর জন্য প্রয়োজন পুকুর শুকানো, বারবার জাল টানা, ঔষধ প্রয়োগ ইত্যাদি।
  • বছরে ২ বার চুন প্রয়োগ করতে হবে। একবার পুকুর প্রস্তুতির সময় আরেকবার শীতকালে।
পুকুর নির্বাচনঃ
  • মাছ চাষের জন্য খোলামেলা পুকুর উপযুক্ত। বাড়ির আশেপাশে অর্থাৎ যাতায়াত ব্যবস্থা যেন ভালো হয়।
  • পুকুরের মাটির গুনাগুন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- দো-আশ মাটি, এঁটেল মাটি পুকুরের জন্য উপযুক্ত।
  • ৩০ শতাংশ থেকে শুরু করে এক একর আয়তনের পুকুর মাছ চাষের জন্য উপযোগী বলে ধরা হয়।
  • মাছ চাষের জন্য পুকুরের গভীরতা ২-৩ মিটার রাখা উচিত।
  • পুকুরের পাড়ের আশেপাশে বড় গাছপালা ঝোপঝাড় রাখা যাবে না।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো পড়ে এবং আলো বাতাস পায় এমন পুকুর দেখে মাছ চাষের জন্য নির্বাচন করুন।
পুকুরে পোনা মজুদঃ আমাদের দেশে বাণিজ্যিকভাবে যেসব মাছ চাষাবাদ করে সেগুলো হল; রুই, কাতল, মৃগেল, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, কালিবাউশ, ব্রিগেড, বিদেশি মাগুর, থাই পাঙ্গাস ইত্যাদি। এ প্রজাতির মাছ গুলো পুকুরের সব স্তরের খাবার গ্রহণ করে থাকে। একসাথে এসব মাছ চাষের আনুপাতিক হার ৪০% উপরিভাগের স্তর, ২৫% পুকুরের মধ্যে স্তর এবং নিম্নস্তর ২৫% আর সব স্তর মিলে ১০%। 

উপরের স্তরের মাছ যেমন-কাতল ও সিলভার কার্প এর আকার হতে হবে ৬-৮ ইঞ্চি ও ৫-৬ ইঞ্চি। রুই ও মৃগেল হচ্ছে মধ্য ও নিচের স্তর এদের আকার হতে হবে ৬-৮ ইঞ্চি। সর্বস্তরের মাছ গ্রাস কার্প ও পাঙ্গাস এদের আকার হতে হবে যথাক্রমে ৬-৯ ইঞ্চি ও ৫-৬ ইঞ্চি। সাধারণত এভাবে মাছের সাইজ হিসাব করে প্রতি শতকে ১৫০ পিস পোনা পুকুরে ছাড়া যায়। এভারেজ হিসাব করলে ৩০ শতাংশের পুকুরের সর্বমোট ৪৫০০ পিস পোনা মজুদ করা সম্ভব।

পুকুরে সার প্রয়োগঃ পুকুরে মাছ চাষ করার জন্য পানির রং সবুজ অথবা হালকা বাদামী হওয়া উচিত। পুকুরের পানির রং পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ৫০ গ্রাম হারে খোল পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে পুকুরে দিতে হবে অন্তত এক সপ্তাহ। এছাড়াও টিএসপি ৫০ গ্রাম, ইউরিয়ার ৫০ গ্রাম, কম্পোস্ট ৫০০-১০০০ হারে প্রয়োগ করতে হবে। যখন দেখবেন পানির কালার অতিরিক্ত সবুজ ও হালকা বাদামি দেখাচ্ছে তাহলে সার প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

মাছের খাদ্যঃ মাছের খাদ্য সাধারণত মাছের আকারের উপর নির্ভরশীল। যদি পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য সরবরাহ বেশি থাকে তাহলে মাছের ওজনের ১-১.৫ ভাগ খাদ্য দিলেই চলবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ পুকুরের তলায় জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস দূর করার জন্য অন্তত কমপক্ষে সপ্তাহে একবার হররা টানা উচিত। এটি টানার ফলে মাছের চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং মাছের খাদ্য গ্রহণের মাত্রা বেড়ে যায় এবং মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছের খাবার তালিকা

মাছ চাষ করতে হলে খাবারের প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে হবে। কারণ মাছ চাষের প্রধান উপাদানই হচ্ছে খাদ্য। বাজারে বিভিন্ন রকমের মাছের খাদ্য পাওয়া যায়। এসব খাবারে সাধারণত প্রোটিন ঠিকমতো থাকে না। আর প্রোটিন যদি সঠিক মাত্রায় না থাকে তাহলে তুলনামূলকভাবে মাছের বৃদ্ধি হয় না। এতে মাছ চাষীদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

আমাদের দেশে তেলাপিয়া মাছের চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে। তাই মাছ চাষীদের প্রাকৃতিক খাবারের প্রতি বেশি নজর দিলে অনেক সাশ্রয়ী হয় এতে খরচও কম হয়। এখন চলুন, তেলাপিয়া মাছের খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • ভাসমান খাবার
  • ডুবন্ত খাবার
ভাসমান খাবারঃ ১০০ কেজি খাবার তৈরির হিসাব হলো;
  • সয়ামিল ২৫%
  • সরিষার খোল ১০%
  • রাইস ব্রান ৩০%
  • ফিশ মিল ২৫%
  • এংকর ১০%
  • চিটাগুর ১ কেজি
  • লবণ ১ কেজি
  • ভিটামিন প্রিমিক্স ৫০০ গ্রাম
উপরিউক্ত খাবারের এভারেজ প্রোটিন মান হতে পারে ২৮-৩০% এর মধ্যে।

ডুবন্ত খাবারঃ ১০০ কেজি খাবার তৈরির হিসাব হলো;
  • এংকর ডাল (মেশিনে গুড়া করা) ৪০ %
  • সয়ামিল (মেশিনে গুড়া করা) ৪০ %
  • রাইস ব্রান ২০%
উপরিউক্ত খাবারের এভারেজ প্রোটিন মান হতে পারে ২৮-২৯%

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আপনারা যারা মাছ চাষে আগ্রহী তারা অবশ্যই মাছ চাষ করার আগে এর সঠিক দিকনির্দেশনা ও পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেবেন। আর যদি সম্ভব হয় তাহলে মাছ চাষ করার জন্য সরকারি ভাবে ট্রেনিং নিতে পারেন। এতে আপনার মাছ চাষ করতে সুবিধা হবে এবং ক্ষতির সম্মুখীন কম হবেন। কারণ আপনি ইউটিউব বা আর্টিকেল দেখে হয়তো কিছু ধারণা পাবেন কিন্তু বাস্তবতায় আপনার এলাকার আবহাওয়া এবং পুকুরের পরিবেশ, মাছ সম্পর্কে বুঝতে আপনার অসুবিধা হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url