বিজয় দিবস রচনা - বিজয় দিবস কবিতা
১৬ ডিসেম্বর কি দিবস১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। এই দিনটি বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে আনন্দের দিন। কেননা ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি পাকিস্তানিদের দাসত্বের বন্ধন ভেঙে দেশকে স্বাধীন করে। এই স্বাধীনতা বাঙালি জাতির হাজার বছরের লালিত করা স্বপ্ন। প্রতিবছর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের রচনা প্রতিযোগিতা হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষায় বিজয় দিবস সম্পর্কে রচনা আসে।
আর এই কারণে আমাদের বিজয় দিবস রচনা সম্পর্কে জানতে হয় এবং প্রয়োজন হয়। বিজয় দিবস রচনা জানতে অনেকে অনলাইনে সার্চ করে থাকে। আপনারাও যারা অনলাইনে সার্চ করে বিজয় দিবস রচনার জন্য আমাদের আর্টিকেলে এসেছেন, আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য অনেক সহায়ক হবে। তাহলে চলুন আজকের এ আর্টিকেলটি শুরু করা যাক,
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বক্তব্য
প্রিয় উপস্থিত শ্রোতা,
আজ ১৬ ডিসেম্বর। এই দিনটি এবং এই তারিখটি একটি সাধারন তারিখ নয়। আজকের এই দিনে বাঙালি জাতির হাজার বছরের স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। আমাদের সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের আমরা এই দিনে গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার মাধ্যমে স্মরণ করে থাকি। কেননা আমাদের এই শ্রদ্ধেয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বুদ্ধিজীবীরা আজকের এই দিনে আমাদেরকে স্বাধীনতা উপহার দিয়েছে। আমাদের এই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ শুধুমাত্র তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি।
১৬ই ডিসেম্বরের এই বিজয় দিনে আমরা স্মরণ করে থাকি আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস। আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাস অনেক ভয়াবহ এবং কষ্টদায়ক। এই স্বাধীনতা খুব সহজে আমাদের হাতে ধরা দেয়নি দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বুকের রক্ত ঢেলে দেওয়ার পর এই স্বাধীনতা আমাদের হাতে ধরা দিয়েছে। এই বিজয়ের দিনে আমাদের বিজয়ের পেছনে সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ স্বীকার করা মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা মন থেকে স্মরণ করে থাকি।
কেননা তারা তাদের বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়ে আমাদেরকে স্বাধীন করেছে। তাদের আত্মত্যাগের কারণে আমরা পাকিস্তানিদের নির্যাতন এবং নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেয়েছি। এই মহান বিজয় দিবসেও আমাকে বলতে হচ্ছে যে আমাদের দেশ খাতা-কলমে স্বাধীন হলেও প্রকৃতপক্ষে এখনো স্বাধীন হয়নি। আমাদের দেশে দুর্নীতি এবং অনিয়মের কারণে গণতন্ত্রের চর্চা নেই এবং আইনের শাসন নেই।
ঊর্ধতম কর্মকর্তাদের নিজেদের কর্মের প্রতি উদাসীনতার কারণে দেশ ধীরে ধীরে অর্থ পতনের দিকে যাচ্ছে। এ সমস্যার সমাধান করার জন্য আমাদের সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমি আপনাদের সকলকে আহবান করব এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য। আসুন আমরা সকলে মিলে আমাদের এই স্বাধীন দেশকে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন এবং সুন্দর ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলি।
বিজয় দিবস শুভেচ্ছা
১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। এই দিনটি বাঙালি জাতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের একটি দিন। কেননা আজকের এই দিনে বাঙালি জাতি পাকিস্তানিদের অত্যাচার এবং নির্যাতনের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিল। এই দিনটি বছরে একবার করে আমাদের সকলের কাছে আসে। এই আনন্দের দিনে আমরা অনেকেই বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আপনারাও যারা বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আমাদের আজকের নিচের লেখাটির সহযোগী হবে।
প্রিয় দেশবাসী, আজকে এমন একটা দিন যেই দিনে আমাদের হাজার বছরের লালিত স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি। হাজার হাজার লাখ লাখ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা আজকের এই দিনে আমাদের কাছে এসেছে। এই দিনটি বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের একটি দিন। তাই আজকের এই আনন্দের দিনে আপনাদের সকলকে জানাচ্ছি মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
প্রিয় স্বাধীন দেশের বাসিন্দা, কিছু বছর আগে আমরা স্বাধীন ছিলাম না। আমরা পশ্চিম পাকিস্তানিদের নির্যাতন এবং অত্যাচারের মধ্যে বন্দী হয়েছিলাম। সেই নির্যাতন এবং অত্যাচারের বেড়াজাল কাটিয়ে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আজকের এই দিনে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। যার ফলস্বরূপ আজকে আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছি। তাই আজকের এই বিশেষ দিনে আপনাদের সকলকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাই।
প্রিয় দেশবাসী, আমরা সকলেই জানি আজকের এই দিনটা আমাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের। এই দিনে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। তবুও বর্তমানে আমাদের এই স্বাধীন দেশে কিছু অসাধু মানুষ রয়েছে যারা দেশকে আবার পরাধীন করতে চায়। তাই আমাদের সকলকে মহান বিজয় দিবসের প্রতি সচেতন থাকতে হবে। আপনাদের সকলকে জানাই বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
প্রিয় উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ, আশা করি আপনারা সকলেই ভাল আছেন। আজকের এই দিনে আনন্দে ভালো থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা আজ ১৬ ডিসেম্বর এবং এই দিন আমাদের সকলের কাছে অনেক আনন্দের। আজকের এই দিনে আমরা পাকিস্তানীদের অত্যাচার এবং নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছি। তাই বিশেষ খুশির দিনে আপনাদের সকলকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাই।
আজকের সেই দিন, যেই দিনে মুক্ত হয়েছে অসহায় বাঙালিরা। আজকে সেই দিন, যেই দিনে পাকিস্তানিদের খাচা থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে বাঙালিরা। আজকের এই দিনে ৩০ লাখ বাঙ্গালীদের রক্তের ত্যাগ সার্থক হয়েছে। তাই আজকের এই বিশেষ দিনে আপনাদের সকলকে জানাই মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
বিজয় দিবস রচনা
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন হচ্ছে ১৬ই ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হয় এই বিজয়ের যাত্রা। দীর্ঘ নয় মাস রক্তের যুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ই ডিসেম্বর শেষ হয় এই যুদ্ধ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাসের এই যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
আরও পড়ুনঃ ২৬ মার্চ কি দিবস
এই দিনে শত বছরের নির্যাতন এবং অত্যাচারের অবসান ঘটে। তাই ১৬ ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস আমাদের সকলের কাছে অত্যন্ত আনন্দের এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। মূলত এ কারণে প্রতিবছর এই দিনটিকে অত্যান্ত গুরুত্বের সাথে এবং যথাযথ মর্যাদাই জাতীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাঃ ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হওয়ার পর পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়। পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের মাধ্যমে পরিচালিত হতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তান সব সময় পশ্চিম পাকিস্তানের নির্যাতন এবং অত্যাচারের শিকার হতে থাকে। একপর্যায়ে এই নির্যাতন অত্যাচার অসহনীয় হয়ে পড়লে বাঙালি জাতি তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে।
বিভিন্ন ধরনের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অনেক বাঙালি মৃত্যুবরণ করে। এই অত্যাচার আরো তীব্র হয়ে ওঠে ২৫ শে মার্চের গণহত্যার পর। পরিশেষে এবং বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তারপর থেকে যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মা সম্পন্ন করে এবং বাঙালি জাতি জয় লাভ করে।
বিজয়ের প্রকৃত অর্থঃ প্রতিবছর একবার করে ১৬ই ডিসেম্বর দিনটি আমাদের কাছে আসে। এই দিনটি বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রামী বিজয়ের স্মৃতি হয়ে আসে। জীবনকে গৌরবান্তিত করে তোলার জন্য এবং দেশের বিজয় ধরে রাখার জন্য এই দিন আমাদেরকে শপথের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে। বিজয় অর্জন করাটা বড় বিষয় নয়, বড় বিষয় হচ্ছে এই বিজয়ের সুফল দেশের প্রত্যেকটি জনগণের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়া। স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে স্বাধীনতা ধরে রাখা অনেক বেশি কঠিন হয়। যার কারণে আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে আমাদের দেশের স্বাধীনতা ধরে রাখার জন্য।
পটভূমিঃ ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয় যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় আমাদের হাতে ধরা দেয়। তবে এই মহান বিজয় শুধুমাত্র নয় মাসের যুদ্ধের ফল নয়। বরং এই স্বাধীনতা কামি যুদ্ধ শুরু হয়েছে ১৯৪৭ সাল থেকে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ পাকিস্তানের ভেতরে পড়ে। তারপর থেকে শুরু হয় পশ্চিম পাকিস্তানিদের নির্যাতন। এই নির্যাতন শুরু হয় ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
পশ্চিম পাকিস্তানিরা উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে চাইলে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। এরপর থেকে একের পর এক আন্দোলন অনুষ্ঠিত হতে থাকে এবং বাঙালি জাতি ঐক্য হতে শুরু করে। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে বড় বড় আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি পাকিস্তানিদের জানিয়ে দেয় যে তারা পাকিস্তানিদের হাতের মুঠোয় বন্দি থাকতে রাজি নয়।
স্বাধীনতা সংগ্রামঃ ১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেয় তখন থেকেই দেশের সর্বস্তরের জনগণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নিজেদের মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে দেশের সকল স্তরের মানুষ একত্রিত হয়। তবে পাকিস্তানিদের অত্যাচার এবং নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি আমাদের দেশের যুবক, বৃদ্ধ এবং শিশু অথবা নারী।
ঘরবাড়ি দোকানপাট সবকিছু তারা আগুনে পুড়িয়ে দেয় এবং একের পর এক বাঙালিদের হত্যা করে। তবে এই অত্যাচারের মধ্যেও বাঙালি জাতি বসে থাকেনি। দেশের সকল স্তরের জনগণ মিলে তৈরি করে মুক্তি বাহিনী। সুন্দর এবং সঠিক পরিচালনার মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুদের আক্রমণ করতে শুরু করে।
বিজয় দিবসের পরিবেশঃ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দীর্ঘ নয় মাসের রক্ত হয়ে যুদ্ধের পর আত্মসমর্পণের ঘোষণা দেয়। এই আত্মসমর্পণের ঘোষণার দৃশ্য দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এগিয়ে আসতে থাকে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কোথাও তিল মাত্র জায়গা নেই। সমস্ত মাঠ রাস্তাঘাট দেশের স্বাধীনতা কামি মানুষদের দ্বারা ভরে ওঠে। আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে বাংলার আকাশ বাতাস।
আত্মসমপর্ণঃ ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর শেষ হয়। এই দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৫ টায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমপর্ণ চুক্তিতে স্বাক্ষরিত হয়। মুক্তিবাহিনী এবং যৌথ বাহিনীর সুপরিকল্পিত কমান্ডের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। লে জে নিয়াজী এবং রাও ফরমান আলী সহ ৯৩ হাজার সৈন্যের নিয়মিত বাহিনী যুদ্ধ বন্দী হয়। তাদেরকে বন্দী শিবিরে নিয়ে যাওয়ার হুকুম দেওয়া হলে তার আত্মসম্পন্ন করতে বাধ্য হয়।
বিজয় দিবসের গুরুত্বঃ বিজয় দিবস বাঙালি জাতির কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। নয় মাসের দীর্ঘ যুদ্ধে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ শাহাদাত বরণ করে। হাজার হাজার মা-বোনেরা তাদের সম্মান হারিয়েছে। তাদের এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আমরা বাঙালিরা সেই শহীদ এবং জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। এই শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের অহংকার এবং আমাদের গৌরব।
চূড়ান্ত বিজয়ঃ অনেক ঝামেলার পর ১৯৭০ সালে পাকিস্তানি সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সম্মত প্রদান করে। এই সাধারণ নির্বাচনে বাংলার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়। এই বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরও পাকিস্তানি সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায় না। তারপর অনেক চাপে পড়লে ১৯৭১ সালে ২৫ শে মার্চ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তারা গণহত্যা শুরু করে। এই রাত্রি ছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসের সব থেকে কলঙ্কময় রাত যাকে কালো রাত বলা হয়।
এই হামলার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। স্বাধীনতার ঘোষণা হওয়ার পরপরই দেশের সর্বস্তরের জনগণ পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। তারা তাদের কাছে যা কিছু আছে সবকিছু নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারপর দীর্ঘ ৯ মাসের রক্ত খেয়ে যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানিরা আত্মসমপর্ণ করতে বাধ্য হয়। এই দিন বাংলার আকাশ আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে এবং চারিদিকে আনন্দের উল্লাস শুরু হয়।
৭১ এর বিজয় উল্লাসঃ বাঙালির মুক্তির সেই লাল টকটকে সূর্য উদিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। এই দিন বাংলার মানুষরা মনের আনন্দে রাজপথে নেমেছিল। যা বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১০০ বছরেও কখনো হয়নি। অবশ্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে নিয়ে আসা স্বাধীনতার আনন্দ তো অবশ্যই অনেক বেশি হবে। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তির উল্লাসে বাংলার আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে আনন্দময় উৎসব ছিল ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। তারপর থেকে প্রতিবছর এই দিন বাংলাদেশের জাতীয় উৎসব হিসেবে পালন করা হয়।
বিজয় দিবস ও আমাদের প্রত্যাশাঃ ১৯৭১ সালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল পাকিস্তানিদের দেশছাড়া করা এবং স্বাধীনতা অর্জিত করা। সেই প্রত্যাশা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পূরণ হয়। যেই দিনটি বিজয় দিবস হিসেবে পরিচিত এবং বাঙালি জাতির স্বাধীনতা লাভের লিখিত দলিল। তবে কাগজে-কলমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও বাংলাদেশের মানুষজন এখনো স্বাধীনতা লাভ করতে পারেনি। বাংলার অসহায় জনগণ এখনো ভুগছে অর্থনৈতিক কারণে। প্রতিবছর বিজয় দিবসের আনন্দে আমরা এই প্রকৃত স্বাধীনতার কথা ভুলে যাই। তাই বাংলাদেশের সকল মানুষের প্রত্যাশা বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হওয়া।
আমাদের করণীয়ঃ আমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তারা অনেক কষ্টের শিকার হয়েছে তবুও দেশকে স্বাধীন করেছে। আমাদের উচিত তাদেরকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা। তবে স্বাধীনতা অর্জন করা যতটা কঠিন তার চেয়েও বেশি কঠিন স্বাধীনতা ধরে রাখা। তাই আমাদের সকলকে দেশের স্বাধীনতার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
উপসংহারঃ বহু কষ্ট, বহু রক্ত এবং বহু মানুষের প্রাণের বিনিময়ে আমরা বিজয় লাভ করেছি। এই বিজয় বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের বিষয়। যার কারণে প্রতিবছর জাতীয়ভাবে অত্যন্ত মর্যাদার সাথে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস পালন করা হয়। বিজয়ের চেতনাকে আমাদের সকলের মনে ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান এবং শ্রদ্ধা থাকতে হবে।
বিজয় দিবস কবিতা
আজ আমরা সকলে গাই বিজয়ের গান,
বিজয়ের গানের মধ্যে আছে বাঙালির প্রাণ।
দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধে ছিল প্রচুর বাধা,
সব বাধা পেরিয়ে আমরা নিয়ে এসেছি স্বাধীনতা।
৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে
আমরা পেয়েছিলাম আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবময় এই বিজয়
আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এই বিজয়।
আজকের এই দিনে আমরা সকলে মিলে গায়ে গান,
সকলে মিলে বিভিন্ন রকম দিতেছি স্লোগান।
আমরা বলি জয় বঙ্গবন্ধু জয় বাংলা
জয় সকল মুক্তিযোদ্ধারা।
শহীদদের আত্মত্যাগ আমরা কখনো ভুলবো না,
তাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা।
এই স্বাধীনতা ছিল আমাদের হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন,
এই স্বাধীনতা আমরা কখনো হতে দেবো না বিপন্ন।
মহান বিজয় দিবস অনেক আনন্দের,
মহান বিজয় দিবস অনেক গৌরবের,
মহান বিজয় দিবস অনেক ভালোবাসার,
এই মহান বিজয় দিবস অনেক কষ্টে অর্জিত স্বপ্ন।
বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য
বিজয় দিবস বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে আনন্দের দিবস। প্রতিবছর জাতীয়ভাবে অত্যন্ত আনন্দের মধ্য দিয়ে এই দিবসটি পালিত হয়। মহান বিজয় দিবস সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বাক্য আমাদের জানতে হয়। কেননা এ বাক্য গুলো বিভিন্ন স্কুল পরীক্ষার সহ চাকরি পরীক্ষায় প্রয়োজন হয়। এছাড়াও সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের বিজয় দিবস সম্পর্কে কিছু বাক্য জানা প্রয়োজন। আপনারা যারা বিজয় দিবস সম্পর্কে কিছু বাক্য জানতে চান তাদের জন্য নিচে বিজয় দিবস সম্পর্কে ১০টি বাক্য তুলে ধরা হলোঃ
- ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস।
- বিজয় দিবসের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ।
- বিজয় দিবস অর্জন করতে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়।
- ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিজয় হয়।
- বিজয় দিবসের পাকিস্তানিরা প্রায় ৯০ হাজার সদস্য নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমপর্ণ করে।
- বিজয় দিবসে সরকারিভাবে ছুটি দেওয়া শুরু হয় ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি।
- ১৯৭২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিজয় দিবস কে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
- বিজয় দিবস বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জনের স্মরণে পালিত হয়।
- ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে সারা বাংলাদেশ সরকারিভাবে ছুটি থাকে।
- এই বিজয় দিবস পুরো বিশ্বকে দেখিয়ে দেয় যে বাঙালীরা দুর্বল নয় তারা অনেক শক্তিশালী।
সর্বশেষ মন্তব্য
আমরা বাঙালিদের সকলেই জানি ১৬ই ডিসেম্বর পৃথিবীর ইতিহাসের ঐতিহ্যবাহী একটি আনন্দের দিন। আমাদের পূর্বপুরুষেরা যেভাবে নিজের জীবন বাজিয়ে রেখে আমাদেরকে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব একটি সুন্দর রাষ্ট্র দিয়েছেন আমরা সকলে চেষ্টা করব আমাদের এ দেশকে সুশৃঙ্খল ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা। প্রিয় পাঠক আশা করছি আমাদের আজকের সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ে আপনি বিজয় দিবস রচনা সহ ১৬ ডিসেম্বরে ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url