চুলকানি দূর করার ক্রিম - চুলকানি প্রতিরোধের উপায়

আপনারা চুলকানি দূর করার ক্রিম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? চুলকানি কোনভাবেই দূর করতে পারছেন না। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য। আজকে আমরা আমাদের শরীরের বিরক্তকর একটি ব্যাধি চুলকানি সম্পর্কে আলোচনা। এ থেকে খুব সহজে কিভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় তা আমরা আজকের লেখাটি পড়ার মাধ্যমে জেনে নেব।
চুলকানি দূর করার ক্রিম - চুলকানি প্রতিরোধের উপায়
যেহেতু চুলকানি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। এবং যদি তা দীর্ঘদিন শরীরে অবস্থান করে তাহলে জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এজন্য চুলকানি সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলেই খুব সহজে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে চুলকানি হয়েছে কিনা বা হলেও কিভাবে তা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

শরীরে চুলকানি কেন হয়

আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি রোগ চুলকানি। শরীরে বিভিন্ন কারণে চুলকানি হতে পারে। যদি দীর্ঘদিন থাকে এবং সঠিক ভাবে চিকিৎসা না করালে চুলকানি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই আমাদের চুলকানিকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত। শরীরের চুলকানি কেন হয়? শরীরে চুলকানি হওয়ার কারণ হল;
  • স্ক্যাবিজ
  • সোরিয়াসিস
  • ফাংগাল ইনফেকশন
  • লিভার সমস্যা
  • কিডনি সমস্যা
স্ক্যাবিজঃ স্ক্যাবিজ হচ্ছে এক ধরনের চর্ম রোগ। যা জীবাণু দ্বারা হয়ে থাকে। এর অন্যতম লক্ষণ হল শরীরে চুলকানি হয় এবং গুটি গুটি হয়ে উঠে। এসব উপসর্গগুলো শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যেমন-আঙুলের ভিতর, কব্জিতে এবং কোমরের আশেপাশে হয়ে থাকে। এর রোগ ছোঁয়াচে হাওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়-চোপড়, গামছা, বিছানা, বালিশ ব্যবহারের ফলে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ রোগের তীব্রতা রাতের বেলা বেশি বেড়ে যায়। শিশুদের মধ্যে এ রোগের লক্ষণ বেশি লক্ষ্য করা যায়।

সোরিয়াসিসঃ সোরিয়াসিস হচ্ছে ত্বকের প্রদাহজনিত একটি রোগ। যার কারণে সোরিয়াসিস হওয়ার ফলেও চুলকানি হতে পারে। সোরিয়াসিস সংক্রামক না কাজেই স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ানোর আশঙ্কা নাই। যে কোন বয়সের মানুষই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সোরিয়াসিস এর চিকিৎসা না করালে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।

ফাংগাল ইনফেকশনঃ ফাংগাল ইনফেকশন হচ্ছে সংক্রামক রোগ। যা বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহনের মধ্য দিয়ে ত্বকে প্রবেশ করে। ফাংগাল ইনফেকশন এর কারণে শরীরে একটি নির্দিষ্ট অঙ্গ আক্রান্ত হয় এবং ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমাদের মধ্যে যাদের ইমউন সিস্টেম কম তারা ফাংগাল ইনফেকশন বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। ফাংগাল ইনফেকশন হলে ত্বক জ্বালা সহ চুলকানি করবে এবং ত্বকে লাল লাল আভা দেখা দিবে।

লিভার সমস্যাঃ অনেক ক্ষেত্রে লিভারের সমস্যার কারণেও চুলকানি হয়ে থাকে। যেমন- ধরুন জন্ডিস হওয়ার কারণেও কিন্তু চুলকানি হয়। তখন বুঝতে পারবেন যে লিভারের সমস্যা জনিত কারণে চুলকানি হচ্ছে।

কিডনি সমস্যাঃ আমরা জানি কিডনির শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তেল বের করে এবং খনিজ লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু কিডনি যখন রক্তের পুষ্টি উপাদান এবং খনিজ লবণের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেনা তখন দেখা দেয় শুষ্ক ত্বক, ত্বক ফেটে যায় ফলে চুলকানি শুরু হয়ে যায়।

এছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে চুলকানি হতে পারে। যেমন-
  • শরীরে ত্বকের শুষ্কতা বেড়ে গেলে বিশেষ করে ত্বকের ময়েশ্চারাইজার।
  • এলার্জি থাকলে।
  • ডায়াবেটিস থাকলে।
  • হরমোনের সমস্যা থাকলে।
  • রক্তশূন্যতা।
  • পানির সমস্যা।
  • ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার।
  • বিভিন্ন ভেজালযুক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার।

চুলকানি আর এলার্জি কি এক

অনেকে চুলকানি আর এলার্জি সম্পর্কে ভুল ভেবে থাকে। মনে করে যে, চুলকানি আর এলার্জি একই। চুলকানি আর এলার্জি কি এক? আসলে কিন্তু তা না চুলকানি হচ্ছে লক্ষণ আর এলার্জি হচ্ছে কারণ। আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের বা বিভিন্ন এলার্জির প্রভাবে চুলকানি দেখা দিয়ে থাকে।

চুলকানির লক্ষণ

আমাদের শরীরে চুলকানি দেখা দিলে বিভিন্ন রোগের কারণে চুলকানি হওয়ার বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এসব রোগ বা লক্ষণ সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা উচিত। কেননা চুলকানিতে দেরি নয়। চুলকানি হলে সঠিক সময়ে চিকিৎসার করানোর প্রয়োজন। এখন চলুন জেনে নেই, চুলকানির লক্ষণ গুলো কি কি।
  • লিভারের সমস্যায় চুলকানি হলে - জন্ডিস, বমি বমি ভাব এবং পেটের ব্যথা হতে পারে।
  • কিডনির সমস্যায় চুলকানি হলে - রুচি কমে যাবে, উচ্চ রক্তচাপ, শুষ্ক ত্বক ইত্যাদি।
  • হাইপো থাইরয়েডিজম সমস্যা হলে - ওজন বৃদ্ধি পাবে, শীত বেশি লাগবে, কোষ্ঠকাঠিন্য।
  • হাইপার থাইরয়েডিজম সমস্যা থাকলে - ওজন কমে যাবে, বুক ধরফর, শরীরে গরম বেশি লাগা, হাত ঘামা।
  • ত্বকের প্রদাহ হলে - ত্বক চাকা চাকা হবে, ফুসকুড়ি দেখা দিবে, মরা চামড়া উঠবে।
  • এলার্জিজনিত সমস্যা - ত্বক চাকা চাকা হবে এবং লাল লাল হবে।

চুলকানি দূর করার ক্রিম - চুলকানি প্রতিরোধের উপায়

অতি পরিচিত একটি রোগ চুলকানি। আমাদের শরীরে বিভিন্ন কারণে চুলকানি হয়ে থাকে। শরীরে ছত্রাকের সংক্রমণ, ডায়াবেটিস রক্তশূন্যতা, হরমোন জনিত সমস্যা এবং শীতকালে ময়েশ্চারাইজার ইত্যাদি সমস্যার কারণে চুলকানি হয়। যদি চুলকানি দীর্ঘদিন যাবত ধরে চলতে থাকে তাহলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য সবারই চুলকানি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে হবে। তাই চুলকানিকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
আপনি চাইলে বিভিন্ন ক্রিম ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলকানি দূর করতে পারবেন এবং বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে চুলকানি প্রতিরোধ করতে পারবেন। আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কোন ক্রিম ব্যবহার করলে চুলকানি দূর হবে এবং চুলকানি কিভাবে প্রতিরোধ করতে হয়। তাহলে চলুন বিস্তারিত জেনে নেই, চুলকানি দূর করার ক্রিম - চুলকানি প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে।

চুলকানি দূর করার ক্রিমঃ
যেসব ক্রিম ব্যবহার করার ফলে আপনি চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। বিভিন্ন চিকিৎসক চুলকানি ভালো করার জন্য বিভিন্ন ক্রিম সাজেস্ট করে থাকেন। তবে এসব ক্রিম ব্যবহারে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে এবং নিয়ম মত ব্যবহার করতে হবে। যেখানে আপনার চুলকানি হয় শুধু সেই অংশেই ক্রিমগুলো ব্যবহার করতে হয়। ক্রিমগুলো হল;
  • পেভিসন
  • এন্টি ডিপ্রেসান্টস
  • কর্টিসোন ক্রিম
  • ক্যালসিনেউরিন ইনহিবিটারস
উপরের উল্লেখিত ক্রিম গুলো আপনি রানের চিপায় চুলকানি হওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আপনি দাদ চুলকানির জন্য নিম্নলিখিত ক্রিমগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এসব ক্রিম গুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার চুলকানি পুরোটাই ভালো হয়ে যাবে। সবচেয়ে ভালো হয় আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্রিম গুলো ব্যবহার করার।
  • পেভিসন
  • পেভিসিয়া
  • ফাঙ্গিডাল
  • ফাঙ্গিসন
  • কলোর্ট্রিমাজল
  • লরিক্স
  • অ্যাভিসন ইত্যাদি।

চুলকানি প্রতিরোধের উপায়ঃ

চুলকানি আমাদের জন্য একটি কমন সমস্যা। যেকোন বয়সের মানুষেরই চুলকানি হতে পারে। চুলকানি বিভিন্ন কারণে হয় যা আমরা আগেই জেনেছি। তবে চেষ্টা করতে হবে চুলকানি যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে চলা। কারণ চুলকানি খুবই বিরক্তিকর একটি রোগ। যখন চুলকানির অনুভূতি হয় তখন চুলকাতেই হবে তাছাড়া আপনি শান্তি পাবেন না এমনটাই আমাদের সবার ক্ষেত্রে হয় তাই না।
তবে চুলকানিকে দীর্ঘস্থায়ী হতে দেওয়া উচিত না। চুলকানি দীর্ঘস্থায়ী হলে তা ত্বকের মারাত্মক ক্ষতির পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য যথাসম্ভব চুলকানি প্রতিরোধ করা উত্তম। তাহলে জেনে নেই, চুলকানি প্রতিরোধের উপায় গুলো কি কি। উপায়গুলো হল;
  • রক্তের CBC ESR পরীক্ষা করানো।
  • কোন ওষুধের প্রভাবে চুলকানি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
  • যদি আপনার মনে হয় কোন খাবার খেয়ে চুলকানি হচ্ছে সেগুলো এড়িয়ে চলা।
  • বেশি তেল ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা।
  • ব্যবহৃত পোশাক নিয়মিত পরিষ্কার করা।
  • চুলকানি হওয়ার উল্লেখিত ব্যাধি থাকলে চিকিৎসা করানো।
  • শরীরের পানি শূন্যতার দূর করতে বেশি বেশি পানি পান করা।
  • ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে উন্নত মানের গ্লিসারিন, পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা।
  • ক্ষতিকর সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা।
  • বাজারে বিভিন্ন ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহার না করা।
  • প্রতিদিন পরিমিত ভিটামিন 'এ' এবং ভিটামিন 'সি' যুক্ত খাবার গ্রহণ করা।
মনে রাখতে হবে শরীরের চুলকানি হলেই যে মারাত্মক রোগের লক্ষণ তা কিন্তু না। এজন্য আগে চুলকানি হওয়ার কারণ বা লক্ষণ বুঝতে হবে। মারাত্মক রোগের প্রভাবের চুলকানি হওয়ার লক্ষণ না থাকলে চিন্তা করার কারণ নাই। একটু সচেতনতা অবলম্বন করলে স্বাভাবিক চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আর যদি বুঝতে পারেন যে, কোন মারাত্মক ব্যাধির কারণে চুলকানি হচ্ছে তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করা।

পরামর্শ দিয়েছেন, ডক্টর পঙ্কজ কান্তি দত্ত।
সরকারি অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

আপনি যদি মনে করেন কোন ওষুধের ব্যবহার ছাড়াই চুলকানি দূর করার তাহলে আপনি ঘরে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে চুলকানি দূর করতে পারবেন। তার জন্য প্রয়োজন কিছু পদ্ধতির ব্যবহার সম্পর্কে অবগত থাকা। আমরা অনেকেই অজানার অভাবে প্রাকৃতিক পদ্ধতির ব্যবহার করতে পারিনা। যারা জানে তারা হয়তো ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন।
তাহলে চলুন দেরি না করে চুলকানি দূর করার ক্রিম - চুলকানি প্রতিরোধের উপায় এই আর্টিকেলের এই পর্বে চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় নিচে তুলে ধরা হলো।

নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েলঃ চুলকানি দূর করতে নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েল অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি দূর করতে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে যেখানে চুলকানি হয় সেই স্থানে তেল দিয়ে ম্যাসেজ করে রাখুন।

বেকিং সোডাঃ চুলকানি প্রতিরোধে বেকিং সোডা অত্যন্ত কার্যকরী। গোসলের সময় হালকা কুসুম গরম পানির সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে গোসল করলে চুলকানি কমে আসে। চুলকানি দূর করতে এক বালতি পানির মধ্যে ১-২ কাপ বেকিং সোডা মিশিয়ে গোসল দিয়ে কমপক্ষে ৩০ মিনিট শরীর ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং পানি না দিয়ে শুকিয়ে ফেলতে হবে।

লেবুঃ লেবুতে রয়েছে আ্যন্টি - ইনফ্লেমেটরি যা ত্বকের চুলকানি কমাতে সহায়তা করে। ত্বকের যে স্থানে চুলকানি হয় সেই স্থানে লেবুর রস মিশিয়ে তা শুকিয়ে ফেলুন। এতে কিছুক্ষণের মধ্যে চুলকানি কমে যাবে।

অ্যালোভেরাঃ রূপচর্চায় বা ত্বকের যত্নে আমরা অ্যালোভেরার ব্যবহার সম্পর্কে সবাই জানি। কিন্তু চুলকানি দূর করতে অ্যালোভেরা কার্যকরী এ বিষয়ে অনেকে জানেই না। ত্বকের যে স্থানে চুলকানি হয় সেই স্থানে অ্যালোভেরার পাতা থেকে রস বের করে লাগিয়ে রাখুন। এতে চুলকানি কমে যাবে।

তুলসী পাতাঃ তুলসী পাতাতে রয়েছে ইউজেনল নামের এক ধরনের অ্যান্সথেটিক উপাদান। যা চুলকানি কমাতে সহায়তা করে। চুলকানি দূর করতে গরম পানিতে ১৫-২০ টি তুলসী পাতা দিয়ে জাল দিয়ে নির্যাস বের করে নিন। এরপর একটা পরিষ্কার কাপড় নিয়ে তুলসী পাতা মেশানো পানি হালকা গরম থাকা অবস্থায় চুলকানির স্থানে লাগিয়ে দিন। এতে চুলকানি থেকে আরাম পাবেন।

ওটসঃ অনেক সময় ঘামাচির কারণে চুলকানি হয়। এ সমস্যা হলে গোসলের উপর নজর দিতে হবে। যার জন্য কার্যকরী হবে ওটমিল। প্রথমে ওটসকে মিহি করে গুড়ো করে নিন। এরপর ওটস এর গুঁড়ো পানির সাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর মিশানো পানি দিয়ে গোসল করুন। এতে চুলকানি থেকে রেহাই পাবেন।

যোনিতে চুলকানি দূর করার ক্রিম

যোনিতে চুলকানি হওয়া নারীদের ক্ষেত্রে অনেক সেনসিটিভ একটি বিষয়। যেকোন বয়সের নারীদের যেকোনো সময় এই সমস্যায় পড়তে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৪ জন নারীদের মধ্যে ৩ জনেরই কোন না কোন সময় এ সমস্যায় ভোগেন। এ সমস্যায় পড়লে অনেক মেয়েরা চিকিৎসকের কাছে বলতে সংকোচ বোধ করে। 

আবার অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে পারেনা। তো আজকে আমরা চুলকানি দূর করার ক্রিম - চুলকানি প্রতিরোধের উপায় আর্টিকেলে নারীদের জন্য যোনিতে চুলকানি দূর করার ক্রিম সম্পর্কে তুলে ধরবো। নিচে যোনিতে চুলকানি দূর করার ক্রিমগুলো হল;
  • Clobetasol Cream
  • Hydrocortisone Cream
  • Metronidazole Vaginal Gel
  • Pevisone
Clobetasol Cream: ক্লোবেটাসল ক্রিম এলার্জিজনিত কারণে ত্বকে হওয়া প্রদাহ, চুলকানি এবং জ্বালা ভাব কমিয়ে দেয়। ক্রিম ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করা উচিত। যে স্থানে চুলকানি হয় সেই স্থানে এই ক্রিম ম্যাসেজ করে লাগিয়ে রাখুন। দিনে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারবেন। চিকিৎসক সাধারণত ৪ সপ্তাহ অথবা এর অধিক সময় ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

Hydrocortisone Cream: এলার্জি, ডার্মাটাইটিস, স্ত্রীর প্রজননতন্ত্রের বাইরের ত্বকে চুলকানি সহ বেশ কিছু ত্বকের সমস্যার কারণে এই ক্রিম ব্যবহার হয়ে থাকে। যেকোন ক্রিম ব্যবহারের আগে আক্রান্ত জায়গা ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর শুকিয়ে গেলে ক্রিম ব্যবহার করতে হয়। দিনে ৩-৪ বার এই ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।

Metronidazole Vaginal Gel: এটি সাধারণত এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক। যা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই জেল শুধু যোনিতে ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য। শরীরের অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না। এটি ব্যবহার করার জন্য এমপ্লিকেটর দেওয়া থাকে যার সাহায্যে যোনির ভিতরে সহজে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ব্যবহারের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Pevisone Cream: পেভিসন ক্রিম যোনিপথের চুলকানি ফাঙ্গাস এবং ছত্রাক সংক্রমনে ক্রিমটি ব্যবহার করা হয়। ত্বকের এলার্জি জড়িত সমস্যার কারণে যেমন-ত্বকের জ্বালা, চুলকানিতে পেভিসন ব্যবহার করা হয়। যে স্থানে আক্রান্ত সেই স্থান পরিষ্কার করে সেখানে এই ক্রিম অল্প করে নিয়ে লাগিয়ে রাখুন। প্রতিদিন ২ বার করে পেভিসন ক্রিম ব্যবহার করতে হয়।

চুলকানি দূর করার ঔষধের নাম

আমাদের শরীরে চুলকানি হলে কিন্তু খুব বিরক্ত লাগে। যার কারণে চুলকানি দূর করার জন্য বিভিন্ন মলম বা ক্রিম অনেকে ব্যবহার করে থাকি। আবার অনেকে আছে চুলকানি ভালো করতে বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে থাকে। চুলকানি দূর করার জন্য যে ওষুধ খেতে হয় সে ওষুধ সম্পর্কে আবার অনেকেরই ধারণা নেই। তাদের জন্য চুলকানি দূর করার ঔষধের নাম তুলে ধরলাম। 

আপনাদের যদি কোন ওষুধ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকে তাহলে সে ওষুধ নিজ ইচ্ছায় সেবন করা ঠিক না। প্রত্যেকের উচিত যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন করা। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে চুলকানি দূর করার ওষুধ এর নাম দেয়া হল;
  • Oradin10mg
  • Alatrol10mg
  • Darma50g
  • Rupadin10mg
  • Sedno5mg
এলার্জিজনিত চুলকানি দূর করার ওষুধ
  • Diphenhydramine
  • Fexofenadine
  • Loratadine
  • Cetirizine
  • Desloratadine

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা আপনাদের জন্য চুলকানি দূর করার ক্রিম - চুলকানি প্রতিরোধের উপায় এই আর্টিকেলের মাধ্যমে চুলকানি সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, আপনারা পুরোপুরি আর্টিকেল পড়ে চুলকানি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে জানা সহ এর ঘরোয়া উপায় এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবং মনে রাখতে হবে চুলকানি হলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত। কেননা চুলকানি দীর্ঘস্থায়ী হলে ত্বকসহ শরীরের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url