চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে জানুন
চিরতরে খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায় আপনারা চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আজকে আমরা বাচ্চা হওয়ার পর
চুল পড়ে কেন,চুল পড়ার কারণ,অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ,চুল পড়ার প্রতিকার
ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাই দেরি না করে চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে জানুন এই
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আমরা চুলের যত্ন নিতে বা চুলকে সুন্দর দেখতে খুব পছন্দ করি। কিন্তু বিভিন্ন কারণে
যদি মাথার চুল পড়ে যায় তাহলে আমরা অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ি। সেজন্য আজকের চুল
পড়ার কারণ সম্পর্কে জানুন আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য।
বাচ্চা হওয়ার পর চুল পড়ে কেন
নারীদের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দ মহত্ব হলো মা হওয়া। মা হওয়ার আনন্দটা
ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। তবে নারীদের মা হওয়ার পর শরীরের বিভিন্ন সমস্যা
লক্ষ্য করা যায়। তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো চুল পড়া। চুল পড়ার কারণে অনেকে
চিন্তিত হয়ে পড়ে এই বুঝি মাথার চুল পড়ে সব শেষ হয়ে যাবে। বাচ্চা হওয়ার পর চুল
পড়ে কেন এ সম্পর্কে সবাই কিন্তু অবগত না।
আরও পড়ুনঃ প্রসাবে ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রতিকার
তাই আজকে আমরা আপনাদের জন্য আলোচনা করবো বাচ্চা হওয়ার পর চুল পড়ে কেন তা
সম্পর্কে।
বাচ্চা হওয়ার পর নারীদের হরমোনের মাত্রা ওঠা নামা করে যার কারণে নারীদের শরীরে
বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে।যখন একটা নারী গর্ভবতী অবস্থায় থাকে তখন
প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায়।
এজন্য বাচ্চা জন্মের পর নারীদের নতুন চুল জন্মাতে শুরু করে এবং পুরনো চুলগুলো
অতিরিক্ত ঝরতে থাকে। এটা হয়ে থাকে সাধারণত বাচ্চা জন্মের ৩-৬ মাসের মধ্যে।
এছাড়াও নারীরা ব্রণ,পিগমেন্টেশন,স্টেসমার্ক,ডার্ক সার্কেল এবং চুল পড়ার
সমস্যায় পড়ে।
অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ
আমাদের সবার কাছে চেহারার সৌন্দর্য বৃদ্ধির অন্যতম হলো চুল। কিন্তু বর্তমানে এই
চুল পড়া অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তা যদি হয় অল্প বয়সে তাহলে মন
থেকে খুব কষ্ট লাগে। এই চুল যদি অল্প বয়সে ঝরে যায় আমরা অনেক টেনশনে পড়ে যাই।
অনেকে এর কারণ সম্পর্কে জানতে চায়। তাই চলুন অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ গুলো কি
কি এবং কেন চুল পড়ে জেনে নেই।
- মানসিক অশান্তি
- দুশ্চিন্তা
- বিষন্নতা
- অপুষ্টির কারণ এছাড়াও
- জ্বর
- লিভারের সমস্যা
- কিডনির সমস্যা
- ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রি
- কেমোথেরাপি পর রক্তশূন্যতা
- অপরিকল্পিত ডায়েট
- ঘুমের অনিয়ম
- খাদ্য অভ্যাস
- জিনগত কারণ
চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে জানুন
চুল পড়ে গিয়ে টাক হওয়ার মত বিব্রত অবস্থা বুঝি আর কোন কিছু নেই। এই চুল পড়া
কিন্তু শরীরের কোন সমস্যায় পড়তে হয় না তবে হ্যাঁ আমাদের সৌন্দর্য টাকে ব্যাঘাত
ঘটায়। আমরা সবাই চুলকে সুন্দর পরিপাটি দেখতে খুব পছন্দ করি। কিন্তু আমাদের বয়স
বাড়ার সাথে সাথে মাথার চুল পড়তে শুরু করলে একপর্যায়ে দেখা যায় মাথা টাক হয়ে
গেছে। বয়স হয়ে গেছে মেনে বা মানিয়ে নেওয়া যায়।
কিন্তু অল্প বয়স বা যুবক বয়সে যদি চুল পড়ে টাক হয়ে যায় তাহলে কিন্তু একেবারে
মেনে নেওয়া যায় না তখন খুবই কষ্ট লাগে। তো আজকে আমরা জানবো আমাদের ভয়াবহ সমস্যা
চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে। সাধারণত চুল পড়ে শরীরের বিভিন্ন সমস্যার কারণে। যা
আমাদের জানা বা ধারণা থাকা খুবই প্রয়োজন। চলুন কারণ গুলো কি কি জেনে নেই।
- হরমোনের পরিবর্তনের কারণে।
- থাইরয়েড সমস্যার কারণে।
- টক্সিন এবং অতিরিক্ত দূষণ এর কারণে।
- অস্বাস্থ্যকর ডায়েট এর ফলে।
- সঠিক মত চুলের যত্ন না নেওয়া।
- মানসিক অশান্তি কারণে।
- ঘুম কম হওয়া বা সময় মতো না ঘুমানো।
- আমিষের ঘাটতির কারণে।
- শর্করার ঘাটতির কারণে।
- খনিজ ও ভিটামিনের ঘাটতির কারণে।
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার কারণে।
- গর্ভাবস্থা বা বাচ্চা হওয়ার পর চুল পড়ে।
- হরমোন কম বেশি কারণে।
- কেমোথেরাপি দেওয়ার পর চুল ওঠে।
- বংশগত কারণেও চুল পড়ে যায়।
- অ্যানিমিয়া,টাইফয়েড রোগ হওয়ার কারণে চুল পড়ে যেতে পারে।
- জন্ডিস,ম্যালেরিয়া এবং ডায়াবেটিস এর কারণেও চুল পড়ে যেতে পারে।
চুল পড়ার প্রতিকার
আমাদের মাথার চুল প্রতিদিন যদি ৬০ থেকে ১০০ টি পরে তাহলে সেটা স্বাভাবিক ভাবে
নেওয়া যায়। কিন্তু যদি এর অধিক বা বেশি পড়তে শুরু করে তাহলে চিন্তায় পড়ে
যাওয়ার বিষয়। তখন আমরা বিভিন্ন উপায় বা পদ্ধতি খুঁজতে থাকি যে কিভাবে চুল পড়া
বন্ধ করা যায়। এজন্য আমরা আপনাদের কথা চিন্তা করে চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে জানুন
আর্টিকেলটির মাধ্যমে চুল পড়ার প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা
করবো। নিচে আমরা চুল পড়া বন্ধ করার প্রতিকার কি কি তুলে ধরলাম।
- প্রথমত চুল পড়া বা টাক হাওয়া যদি বংশগত হয়ে থাকে তাহলে কিছু করার নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এর পাশাপাশি এসব করতে হবে তা হলো;
- পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
- নিয়মিত ভিটামিন ও খনিজ গ্রহণ করতে হবে।
- সব সময় দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।
- চুলে কলপ বা বিভিন্ন রং করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- টেনে চুল বাধা উচিত না আস্তে আস্তে চুল আচড়াতে হবে।
- সপ্তাহে ২-৩ দিন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
- ব্লিচিং বা ডাই বেশি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় এলাচ রাখুন। এলাচ চুলের গোড়া শক্ত করতে সহায়তা করে।
- ফ্লাক্সোসিড এর কারণে চুল বৃদ্ধি করার ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। তাই নিয়মিত ফ্লাক্সোসিড খেতে পারেন।
- পুষ্টির অভাবে চুল পড়ে। এর প্রতিরোধের জন্য বিটের রসে পুষ্টিকর উপাদান থাকে। বিটের রস চুল পড়া বন্ধে সাহায্য করে।
- নারিকেল তেল অনেকেই দিয়ে থাকেন। কিন্তু দেওয়ার নিয়ম আছে। তেল বাটিতে নিয়ে হালকা গরম করুন। এরপর চুলের গোড়ায় লাগিয়ে দিয়ে মেসেজ করুন। ফলে খুব দ্রুত উপকার পাবেন।
- পেঁয়াজ মাথাতে ব্যবহার করতে পারেন। এতে মাথার ত্বক ছত্রাক সংক্রমণ দূর হবে। এবং মাথা ঠান্ডা রাখে।
- মেহেদী পাতা রস করে তা মাথায় লাগাতে পারেন। এতে করে চুলের গোড়া শক্ত হয়।
- চুলের জন্য অ্যালোভেরা অনেক উপকারী। অ্যালোভেরার জেল প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট মাথায় লাগিয়ে তারপর ধুয়ে ফেলতে পারেন।
- ডাবে ভিটামিন ই ও চর্বি থাকে। ডাবের পানি বেশি পরিমাণে খেলে চুলের আদ্রতা বজায় থাকে এবং চুল স্বাস্থ্যকর থাকে। প্রতিদিন ডাবের পানি খেলে দেখবেন চুল পড়া কমে গেছে।
মেয়েদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম
আমরা সবাই চাই বিশেষ করে মেয়েরা চায় ভালো তেল ব্যবহার করে ঝলমলে সুন্দর চুল
করার। কিন্তু ঝলমলে চুল করার জন্য নিয়মিত চুলের সমস্যা বুঝে চুল ম্যাসেজ করা।
যার ফলে শরীরে প্রশান্তি আসবে এর পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। এবং মানসিক
চাপ কমিয়ে আনবে। আমাদের উচিত হবে প্রথমত চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে বোঝা। তাহলে
খুব তাড়াতাড়ি সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিলে খুব দ্রুত চুল পড়া বন্ধ করা যাবে।
অনেকে জানতে চায় চুল পড়া বন্ধ করার তেল সম্পর্কে।
আমরা বাজারে চুল পড়া বন্ধের বিভিন্ন রকমের বিভিন্ন কোম্পানির তেল দেখতে পাই।
কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কোন তেলটা ব্যবহার করা আমাদের চুলের জন্য উত্তম। আবার
বাজারে চুল বন্ধ করা তেল যে আমাদের জন্য উপকারী হবে তা কিন্তু নয়। বরং কিছু কিছু
তেল আছে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হয়ে থাকে। সেজন্য তেল কিনতে গেলে অবশ্যই
সচেতন ভাবে কিনতে হবে এবং তেলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা তা সম্পর্কে জেনে
কিনতে হবে।
আরও পড়ুনঃ চর্মরোগ প্রতিরোধ করার উপায় ২০২৩
যেমন যেসব তেলে যা যা থাকা দরকার প্রাকৃতিক নির্যাস থাকা প্রয়োজন, ভিটামিন ই
,ভিটামিন ডি এবংঅ্যান্টি - ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। তো আজকে জানবো মেয়েদের চুল
বন্ধ করার তেলের নাম।
- রোজমেরি অয়েল
- হিমালয় হার বার্বালস অ্যান্টি হেয়ার অয়েল
- লেমনগ্রাস অয়েল
- বায়োটিক বায়ো ব্রিনগ্রাজ ফ্রেশ গ্রোথ থেরাপিউটিক ওয়েল
- সলফ্লাওয়ার অলিভ অয়েল
- ডাবর অলমন্ড হেয়ার অয়ে
- সাইডার উড অয়েল
- ইন্ডাস ভ্যালি বায়ো অর্গানিক হেয়ার অয়েল
- বার্গামট অয়েল
- প্যারাসুট অ্যাডভান্স গোল্ড কোকোনাট হেয়ার অয়েল
চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন
আমাদের মাথার চুল পড়ে বিভিন্ন কারণে। যা আমরা উপরে আলোচনা করেছি। তার মধ্যে
অন্যতম হলো ভিটামিন। তো আজকে আমরা জানবো আসলে কোন কোন ভিটামিন এর কারণে চুল পড়া
বন্ধ হতে পারে। এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাহলে চলুন চুল পড়া
বন্ধ করার ভিটামিনের নাম গুলো জেনে নেই।
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন বি
- ভিটামিন সি
- ভিটামিন ডি
- ভিটামিন ই
- জিংক
- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক,আজকে আমরা আপনাদের জন্য চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে জানুন এই
আর্টিকেলটির মাধ্যমে বাচ্চা হওয়ার পর চুল পড়ে কেন,অল্প বয়সে চুল পড়ার
কারণ,সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এবংচুল পড়ার কারণ,চুল পড়ার
প্রতিকার,মেয়েদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। আশা করছি,এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ার মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
ড্রিমসসেফ আইটিির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url